নোটিশ: বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় সাইটটি শীঘ্রই সাসপেন্ড হয়ে যাবে, অনুগ্রহ পূর্বক যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।

কেমন কাটছে জাহানারার ঈদ: অস্ট্রেলিয়া।

আমারদেশ২৪
সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫

‘খেলছি, ঘুরছি, রান্না করছি আর খাচ্ছি, হাহাহা’-সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকেজাহানারা আলম যখন কথাগুলো বলছিলেন তখন যেন মুঠোফোনের ওপাশ থেকে উচ্ছ্বাস ঝরে পড়ছে।

বাংলাদেশ নারী জাতীয় ক্রিকেট দলের এই তারকা অলরাউন্ডারের বাস এখন অস্ট্রেলিয়ায়। সিডনি ক্রিকেট ক্লাবের আমন্ত্রণে গত ডিসেম্বরে পাড়ি জমান ক্যাঙ্গারুর দেশে। সেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলছেন, কমিউনিটিভিত্তিক বিভিন্ন টুর্নামেন্ট প্রোগ্রামেও নিয়মিত যাতায়ত আছে তার।

বিদেশ বিভূঁইয়ে কেমন কাটছে জাহানারার? উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, ‘খুব ভালো সময় যাচ্ছে। এখানে সব কিছু সুশৃঙ্খল, নিয়মের মধ্যে। সেভাবেই মানিয়ে নিয়েছি। সবাই যথেষ্ট সাপোর্ট করছে, হেল্প করছে। আমার ক্লাবের সতীর্থরা, ক্লাব অফিসিয়াল সবাই অনেক সাপোর্টিভ, ভালোই কাটছে।’

রমজান শেষে আসছে খুশির ঈদ। মুসলিম ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে আনন্দের, উৎসবের দিন। কিন্তু পরিবার, বন্ধু ফেলে দূরের এই ঈদে একা একা কী করবেন জাহানারা?

এমন প্রশ্নে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা আবেগি হওয়ার কথা যে কারোই। কিন্তু না, লড়াই সংগ্রাম করে নিজেকে বারবার প্রমাণ করা জাহানারা পরিচয় দিলেন দৃড় মানসিকতার।

তিনি বলেস, ‘একা আছি, নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি। এটা আমার ভাগ্যে লেখা আছে। এখন এটাকে কীভাবে উপভোগ করা যায় সেটা চিন্তা করছি, ভাবছি। একা আছি এ জন্য আমার কখনো মন খারাপ হয় না। আমি আমার পিক টাইমেও লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি, এগুলো আমার সমস্যা হয় না।’

‘এখন অনেক বড় হয়েছি। জীবনে অনেক ঈদ আমার সেকেন্ড ফ্যামিলির (ক্রিকেট দল) সঙ্গে কাটিয়েছি। ক্যাপে কাটিয়েছি অনেক ঈদ। পরিবারের জন্য কিছুটা মন খারাপ লাগলেও সেটা আমি মেনে নিয়েছি। মেনে নিলেই কষ্ট কম হবে। কোনো ব্যাপার না।’

অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে বাংলাদেশ থেকে কেনাকাটা করেছেন জাহানারা। ঈদসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের কথা ভেবে তিনটি জামা কিনে নিয়ে যান। কিন্তু খেলার ব্যস্ততার কারণে পরা হয়নি একটিও। ঈদের তিন তিন এই তিন জামা পরেই কাটাবেন।

কেনাকাটার প্রশ্নে জাহানারা বলেন, ‘তিনটা জামা নিয়ে আসছি, একটাও পরা হয়নি (হাসি)। সবগুলো নতুন। তিন দিন তিনটা পরব। আর কিছু যদি কিনতে মন চায় এখান থেকে অবশ্যই নেব।’

ঈদের দিনে বিশেষ রান্না করতে ভালোবাসেন জাহানারা। ঢাকায় ঈদে রান্না করে টেবিলে ভর্তি করে ফেলতেন। পরিবারসহ বন্ধুদের নিয়ে সেগুলো খেতেন। অস্ট্রেলিয়া থাকলেও রান্না মিস হবে না।

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এখানেও স্পেশাল রান্না করার ইচ্ছা আছে আমার। ঈদের দিন খুশির দিন। ভালো মন্দ খাওয়া প্রয়োজন। রান্না করব না কেন। গরুর মাংস, খাসির বিরিয়ানি, রোস্ট পোলাউ আর অবশ্যই সেমাই। চটপটি রান্না করতাম কিন্তু এখানে একদিন রান্না করেছিলাম কিন্তু ভালো হয়নি। এ জন্য বাদ।’তবুও বিদেশ বলে কথা। জাহানারা কী কিছুই মিস করবেন না? এখানে যেন কিছুটা আটকে গেছেন পেশাদার এই অ্যাথলেট। দেশের ঈদে সাজগোজ করে হুটহাট কারো বাসায় চলে যেতেন। সন্ধ্যার পর কোথাও না কোথায় ঘুরতে যেতেন। গ্রামের বাড়ি খুলনায় থাকলে সন্ধ্যায় রূপসা ব্রিজে ঘুরতে যেতেন। সেসব মিস করবেন জাহানারা।

তিনি বলেন, ‘খুব সুন্দর করে সাজুগুজু করে নতুন জামা পরে কোনো আত্মীয়র বাসায় হুট করে চলে যাওয়া, বন্ধুদের নিয়ে ঘোরাঘুরি করা, সন্ধ্যায় খুলনার রূপসা ব্রিজে সময় কাটানো এসবতো আর এখানে হবে না, এগুলো মিস করব।’

এসব বিষয় মিস করলেও জাহানারা ঈদ কাটাতে চান এখানকার নতুন বন্ধুদের নিয়ে। উপভোগ করতে চান নিজের মতো করে। ঈদ নিয়ে তো অনেক কথা হলো, লাল সবুজের জার্সিতে কবে দেখা যাবে আবার?

জাহানারা বলেন, ‘আমিতো এখন বাংলাদেশ দলের মোস্ট সিনিয়র (হাসি) তবুও আরও দুই/তিন বছর খেলার ইচ্ছা আছে। এখানে বোলিং থেকে শুরু করে সবকিছুতে দারুণ উন্নতি হচ্ছে আমার, এতে আমি অনেক খুশি। দেখা যাক কপালে কী লেখা আছে।’

অগ্রিম ঈদ মোবারক দিয়ে এবারের মতো শেষ করছি…

হাসতে হাসতে জাহানারের উত্তর, সবাইকে অগ্রিমম ঈদ মোবারক।

আরও পড়ুন