আজ বুধবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় অভ্যুত্থানে আহত দুজন শিক্ষার্থীর হাতে হেলথকার্ড তুলে দেন অধ্যাপক ইউনূস। এই দুই যোদ্ধা হলেন নরসিংদী ইউনাইটেড কলেজের শিক্ষার্থী ইফাত হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমু।
গত বছরের ১৯ জুলাই আন্দোলনের সময় নরসিংদীতে পুলিশের গুলিতে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান ইফাত। তিনি এখনও এক চোখে দেখতে পান না। অন্যদিকে, ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী ইসরাত বর্তমানে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন। তাদের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসাসেবা ও অন্যান্য বিষয়ে খোঁজ নেন প্রধান উপদেষ্টা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট জেলায় হেলথকার্ড বিতরণ করা হবে।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী জানান, ইনস্টিটিউটে এখন পর্যন্ত ১০৭৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৯ জনের দু’চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে এবং প্রায় ৪৫০ জনের এক চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চোখের ইনজুরির জন্য ৬৫০টিরও বেশি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক ড. মুহাম্মদ আবুল কেনান জানান, এখন পর্যন্ত ২১ জন রোগীর হাত অথবা পা কেটে ফেলতে হয়েছে। কয়েকজন রোগীকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য বাছাই করা হয়েছে। তবে অধিকাংশ রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
হেলথকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই হেলথকার্ড থাকার অর্থ হলো যেকোনো সময় দেশের যেকোনো সরকারি হাসপাতালে কার্ডধারীরা চিকিৎসা পাবেন। এই কার্ড সবসময় কার্যকর থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ে আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাদের মানসিক ও সামাজিক পুনর্বাসনের জন্যও উদ্যোগ নিতে হবে।”
এই উদ্যোগে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমান, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধসহ আরও অনেকে।