দেশে কোনো রাজনৈতিক দল দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। সরকারের মেয়াদ হবে চার বছর। নির্বাহী বিভাগ প্রধানমন্ত্রী পরিচালনা করলেও সাংবিধানিক পদে নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকবে না। সংবিধান প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার বিষয়ে এমন প্রস্তাব এনেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।গতকাল শনিবার জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাবনার কথা জানানো হয়।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি একই সঙ্গে নিজ দলের প্রধান এবং সংসদ নেতা হতে পারবেন না। জীবনে দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রাষ্ট্রের আর কোনো পদেই তিনি থাকতে পারবেন না। কোম্পানি বা ব্যবসা। প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় সব সম্পদ এবং সম্পত্তি স্টেট ব্যাংকের অধীনে চলে যাবে।
এতে বলা হয়, কোনো সাংবিধানিক পদের নিয়োগে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে পারবেন। তবে তা পালন করা রাষ্ট্রপতির জন্য আবশ্যকীয় হবে না। সাংবিধানিক পদে নিয়োগ ও অপসারণ আইন দ্বারা নির্ধারিত হবে। সাংবিধানিক পদে আসীন কাউকে অপসারণ করার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর থাকবে না।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, ৭০ অনুচ্ছেদের কঠোরতা খর্ব করতে হবে। সংসদ সদস্যরা দল বদল করলে তথা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে বা দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করলে বা অব্যাহতি দেওয়া হলে তার সংসদ সদস্য পদ শুন্য হবে।
আস্থা ভোটে দলের বিপরীতে ভোট দেওয়া যাবে না। তবে অন্য যে কোনো বিষয়ে তিনি স্বাধীন থাকবেন, দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন। সরকারের মেয়াদ হবে ৪ বছর।
প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীসভার যাবতীয় সিদ্ধান্ত রদ করা বা চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা সংসদীয় দলের থাকবে। প্রধানমন্ত্রী হবেন সম ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথম, অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী ক্রমবিচারে প্রথম হবেন- ক্ষমতা বিচারে নয়। মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী চয়ন করবেন।
তবে সংসদের তাতে অনুমোদন নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করবেন এবং রদবদল করতে পারবেন। তবে অপসারণ করতে হলে সংসদের অনুমোদন নিতে হবে। সংসদীয় কমিটির ক্ষমতা বাড়াতে হবে। মন্ত্রিসভার যাবতীয় সিদ্ধান্ত সংসদীয় কমিটি চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। শুনানি এবং সুপারিশের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত আইনসভায় পাঠাবে মন্ত্রিসভা। এরপর সুপারিশ আইনসভায় ভোটাভুটির মুখোমুখি হবে।
এতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দেওয়ার অধিকারী হবেন। তবে তা পালন করা রাষ্ট্রপতির জন্য আবশ্যকীয় হবে না। আইনসভাই কেবল সিদ্ধান্ত নেবে। তবে জরুরি আইন/আদেশ সর্বোচ্চ আদালতের কাছে পাঠাতে হবে। আদালত আইনের সাংবিধানিকতা/ অসাংবিধানিকতা সম্পর্কে রায় দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত বাহিনীগুলার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রধান হবেন। কোনো বাহিনীই সরাসরি তার অধীন থাকবে না