ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের অবহেলায় আশা নামে ৩ মাসের শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আশা উপজেলার কনিকাড়া গ্রামের আশরাফ মিয়ার মেয়ে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত দুইদিন ধরে ঠাণ্ডা জনিত সমস্যায় ভুগছেন শিশু আশা। পরে মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন তার পরিবার। ডিউটিরত ডাক্তার রোগীকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যেতে বলেন, কিন্তু সেখানে গিয়েও ডাক্তারকে পাওয়া যায়নি। পরে দ্বিতীয় তলা থেকে আবার কোয়ার্টারে নিয়ে যেতে বলেন, সেখানে অন্যান্য রুগী দেখছিলেন কর্তব্যরত ডাক্তার। ৫ মিনিট অপেক্ষার পর পরিবারের লোকজনের রিকুয়েস্টে শিশু রোগীকে দেখে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে অক্সিজেন দেওয়ার কথা জানান।
প্রায় ১ ঘণ্টা শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালে ঘুরাঘুরি করে কোনো সেবা পাইনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শিশু আশার মৃত্যু হয়েছে দাবি করেন তার পরিবার। নিহত শিশুর মামা আমজাদ হোসেন বলেন, বাচ্চাটি সুস্থ ছিল হাসপাতালে নিয়ে প্রথমে জরুরি বিভাগে যায়, ঐ খানে ডাক্তার না থাকায় দ্বিতীয় তলায় যেতে বলেন। দ্বিতীয় তলায় গেলে নিচতলায় পাঠায়, নিচতলা থেকে পুকুর পাড় কোয়ার্টারে পাঠায়। প্রায় ১ ঘণ্টা পর কর্তব্যরত ডাক্তার শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের অবহেলায় শিশুটি মারা গেছে।
উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, দ্বিতীয় তলায় যাওয়ার কথা আমি বলিনি হয়তো আমার আশেপাশে থাকা অন্য কেউ বলে থাকতে পারে।
এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করছিলেন চিকিৎসক সামিহা সুলতানা। তিনি জানান, ৩ টা ৪৫ মিনিটে শিশুটিকে আমার কাছে নিয়ে আসে, আমি যখন দেখি তখন হার্ড সাউন্ড পাইনি, চোখের আলো দিয়ে কোনো রিয়েকশন পাইনি, শ্বাস নিচ্ছে না, কনফার্ম হওয়ার জন্য ইসিজি পরীক্ষা করতে বলি। ইসিজি পরীক্ষায় শিশুটি বেঁচে আছে এমন কিছু দেখিনি। তার পর শিশুটি মৃত বলে ঘোষণা করি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কিশলয় সাহা সময়ের আলোকে জানান, নবীনগর থানায় শিশুর পরিবারের লোকজন অভিযোগ করতে গেলে থানা থেকে ওসি আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি আমাকে অবগত করেন পরে দুই পক্ষকে আমার অফিসে নিয়ে বসলে জানতে পারি রোগীর পরিবার লোকজন বিকাল ৩টায় জরুরি বিভাগে আসেন। তারা শিশু বিশেষজ্ঞ অথবা ভালো ডাক্তারকে দেখাতে চেয়েছিল, তাই শফিক উনাদের দ্বিতীয় তলায় পাঠায়। প্রায় ৪৫ মিনিট পরে ডাঃ সামিহার কাছে গেলে উনি পরীক্ষা করে শিশুটি মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে তদন্ত করবো যদি হাসপাতালের ডাক্তারদের অবহেলায় শিশুটি মারা যায় তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।