ঢালিউড কিংবদন্তি ও প্রবীণঅভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন। সংকটাপন্ন অবস্থায় তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর। ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘প্রবীর মিত্র দাদা আর নেই। কিছুক্ষণ আগে উনি ইন্তেকাল করেছেন। স্রষ্টা তাকে ক্ষমা করুক।’
প্রবীর মিত্রের পুত্রবধূ সোনিয়া ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাতে গোসল শেষে ফ্রিজার গাড়িতে প্রবীর মিত্রের লাশ ধানমন্ডির বাসায় রাখা হবে। আগামীকাল জোহরের নামাজের পর এফডিসিতে প্রথম জানাজা হবে। এরপর চ্যানেল আইতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
৮১ বছর বয়সী প্রবীর মিত্র বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা নিয়ে ১৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শরীরে অক্সিজেন-স্বল্পতাসহ বেশ কিছু অসুস্থতায় গত ২২ ডিসেম্বর তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।
প্রবীর মিত্র ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন।
১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ দিয়ে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন প্রবীর মিত্র। ১৯৮২ সালে তিনি ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৮ সালে আজীবন সম্মাননা বিভাগে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হয়।
তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলো হলো
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’। চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন গুণী এই অভিনেতা।