রবিবার০২ জানুয়ারি ২০২৫
বাড়ানো চুক্তির মেয়াদ গত ৭ জানুয়ারি শেষ হলে পুনরায় মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে
এই টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে বিদেশি অপারেটরদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ডিপি ওয়ার্ল্ড পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পের আওতায় জিটুজি ভিত্তিতে টার্মিনালটি পরিচালনার আগ্রহ দেখিয়েছে। এসব প্রস্তাব সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বলে উল্লেখ করে সূত্র বলেছে, দেশের স্বার্থ পুরোপুরি রক্ষা করে চট্টগ্রাম বন্দর এবং দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য লাভবান হলে সরকার এই টার্মিনালেও বিদেশি অপারেটর নিয়োগ করতে পারে। পিসিটির মতো এনসিটিতেও বিদেশি অপারেটর নিয়োগ করার ব্যাপারে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে।
বে টার্মিনালে বিদেশি বিনিয়োগ, বিদেশি অপারেটরকে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়াসহ সার্বিক বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। হালিশহরের উপকূলীয় এলাকার ৯৩৯ একর ভূমিসহ সাগর ভরাট করে গড়ে তোলা প্রায় আড়াই হাজার একর জমিতে বে টার্মিনাল গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক, সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ, ডিপি ওয়ার্ল্ডসহ বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন কোম্পানির বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে।
সিঙ্গাপুরের আদলে সাগর ভরাট করে উদ্ধার করে আনা ভূমিতে নির্মিত হবে বে টার্মিনালের অবকাঠামো। এটি দেশে সবচেয়ে বড় রিক্লেইমের ঘটনা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। একইসাথে সাগরের স্রোতসহ পানির গতিপ্রবাহ ঠিক রাখতে বঙ্গোপসাগরে বাঁধ দিয়ে ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ করতে হবে। ব্রেক ওয়াটার এবং চ্যানেল তৈরির কাজটি ব্যয়বহুল। বিশ্বব্যাংক এই দুটি কাজের জন্য অর্থায়ন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, চ্যানেল তৈরি এবং ৬ কিলোমিটার ব্রেকওয়াটার নির্মাণে অন্তত ৬৫০ মিলিয়ন ডলার বা ৭ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। বিশ্বব্যাংক এই টাকার পুরোটার যোগান দেওয়ার কথা রয়েছে।
এই প্রকল্পে সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ, ডিপি ওয়ার্ল্ডসহ বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন কোম্পানির বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে। বিশেষজ্ঞ সূত্রগুলো বলেছে, বে টার্মিনালে মোট চারটি জেটিসহ আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো গড়ে তোলার কথা রয়েছে। এর প্রথম দুটি টার্মিনাল নির্মাণে প্রতিটির জন্য ১৫০ কোটি ডলার করে মোট ৩শ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল (সিঙ্গাপুর পোর্ট) এবং আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড বা দুবাই পোর্ট। এছাড়া আবুধাবি পোর্টস ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগে একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করবে। বে টার্মিনালের চতুর্থ টার্মিনালটিকে লিকুইড টার্মিনাল হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এখানে জ্বালানি তেল খালাস এবং মজুদসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার ব্যাপারে কথাবার্তা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
ইতোমধ্যে বন্দরের প্রকল্পে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের জন্য ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার কাজ শুরু করেছেন। তারা কি কি শর্তে টার্মিনালগুলো বিদেশি অপারেটরকে দেওয়া যায় তা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং প্রয়োজনীয় গবেষণা করে রিপোর্ট প্রদান করবে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই বিদেশি অপারেটরকে টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।