মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করলেও রাজনৈতিক কিংবা নির্বাচনি জোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত তারা কার ঘরে যাবে সে জন্য বিএনপি ও জামায়াতকে অপেক্ষায় রাখতে চায় দলটি। বিএনপি ও জামায়াতের মনোভাব ও প্রতিশ্রুতির ধরন দেখে নির্বাচনের সুবিধামতো সিদ্ধান্ত নেবে ইসলামি আন্দোলন। আপাতত তারা মাঠের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে চায়। একই সঙ্গে ইসলামি জোট গঠনে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
গত ৫ আগস্টে রাজনীতিতে পটপরিবর্তনের পর গুরুত্ব বেড়ে যায় বরিশালের চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন। হাতপাখা প্রতীকে দলটির কোনো সংসদীয় আসনে জয়লাভ করতে না পারলেও সাড়া ফেলার মতো ভোট পেয়েছে। ভোটের মাঠে গুরুত্ব বুঝেই প্রথমে জামায়াত ও গতকাল বিএনপির নেতারা চরমোনাই পীরের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সোমবার দুপুর ১২টায় পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। এই বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের আমিরের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন সিনিয়র নেতা। তারা একসঙ্গে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটান। জোহরের নামাজও আদায় করেন।
বৈঠক প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র মহাসিচব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ সময়ের আলোকে বলেন, বিএনপির সঙ্গে আমরা জোটবদ্ধ হওয়ার আগে মূলত দুটি বিষয়ে নজর রাখতে হবে। এক. ইসলামি যে ঐক্য তৈরির প্রক্রিয়া চলছে সেটি কোথায় গিয়ে ঠেকে।
দুই. জামায়াতে ইসলামী শেষ পর্যন্ত কি করতে চায়। নির্বাচন যেহেতু এখনও এক বছরের মতো বাকি আছে; এই সময়ের মধ্য এই বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। পরিস্থিতি যেদিকে সুবিধাজনক মনে হয়; সেদিকে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এ জন্য সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি ও সখ্য রাখছি। জামায়াত ও বিএনপির কোনো বৈঠকে জোট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে কী আলোচনা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল।
আমরা তাদের স্বাগত জানিয়েছি। তারা কিছু লিখিত অঙ্গীকার করেছে। আশা করি ক্ষমতায় গেলে বিএনপি প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ করবে না। গত ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি ও দখলদারিতে বিএনপি নেতাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে। আমরা পরিষ্কারভাবে এগুলো বন্ধ করতে বলেছি। জবাবে বিএনপি মহাসচিব আশ্বস্ত করেছেন আমরা নাম দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।
এ ছাড়া আমরা কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেছি। এই যেমন আমাদের দলীয় কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীরা বাধা দিচ্ছে। কিছু জায়গায় হেনস্থা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে এই পরিস্থিতির রাশ টানতে বলেছি। বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভবিষ্যতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। বিএনপি নেতাকর্মীরা আমাদের সহযোহিতা করবেন।
এ জন্য তারাও আমাদের অনুরোধ করেছেন যাতে বিএনপিকে উদ্দেশ করে কথাবার্তা না বলি; যার ফলে দলের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা এতে একমত হয়েছি। তবে বৈঠকে জামায়াত ও ছাত্র নেতাদের সঙ্গে বিএনপির টানাপড়েন নিয়ে কোনো কথা হয়নি বলে জানান ইসলামী আন্দোলনের এই শীর্ষ নেতা।