নোটিশ: বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় সাইটটি শীঘ্রই সাসপেন্ড হয়ে যাবে, অনুগ্রহ পূর্বক যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।

বিনোদন কেন্দ্রে উৎসবের আমেজ।

নিউজ ডেস্কঃ
বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫
ঈদুল ফিতরে টানা নয় দিনের দীর্ঘ ছুটি পেয়েছে মানুষ। এই সুযোগে কেউ বেড়াতে গেছেন দূর-দূরান্তে, কেউ রাজধানী ও আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রে পরিবার নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন।ছুটিতে রাজধানী ও দেশের বিনোদন কেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঈদের ৩ দিন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল লোকে লোকারণ্য, উৎসবের আমেজ। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই উপভোগ করেছেন ছুটির এই আমেজ।
বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঈদের দিনের চেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে আজ বুধবার (২ এপ্রিল)। এদিন রাজধানীর মিরপুরে চিড়িয়াখানা, উত্তরার দিয়াবাড়ির নৈসর্গিক সৌন্দর্য, স্বপ্নের মেট্রোরেল ভ্রমণ, হাতিরঝিলের নয়নাভিরাম দৃশ্য, সবুজের সমারোহ ও পাখির কলতানে মুখর বোটানিক্যাল গার্ডেন, শিশুপার্কগুলোতে নানা বয়সী মানুষের আগমনে উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া ফ্যান্টাসি কিংডমসহ রিসোর্টগুলোতেও ছিলো উপচে পড়া ভিড়।
শুধু ঢাকাবাসীই নয়, আশপাশের জেলা ও শহর থেকেও মানুষ ছুটে এসেছেন ঢাকার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। শিশুরা হাত ধরে বাবা-মায়ের সঙ্গে উচ্ছ্বাসে ঘুরছে, তরুণ-তরুণীরা দল বেঁধে সেলফি তুলছে, আর মধ্যবয়সী মানুষরা পরিবার নিয়ে স্মৃতির ঝুলি ভরছেন। প্রতি বছর ঈদের সময় ঢাকার বিনোদন কেন্দ্রগুলোর একই চিত্র দেখা যায়। তবে এবার অতিরিক্ত মানুষের ভিড়ের কারণে বিনোদনের সুযোগ কমে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন দর্শনার্থীদের।
বিভিন্ন পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, এবারের ঈদে দর্শনার্থীর চাপ অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। ঈদ উপলক্ষে তারা নানা ছাড় ও নতুন রাইড, গেম এবং প্যাকেজ চালু করেছে।রাজধানীর অন্যতম দর্শনীয় স্থান জাতীয় চিড়িয়াখানা। বাঘ, সিংহ, হরিণ, ময়ূর, বানর, সাপ, নানারকম পাখি ও জলহস্তীসহ বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো।
উত্তরা থেকে পরিবার নিয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসা রনি জানান, চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখে খুব ভালো লাগছে। চিড়িয়াখানার পরিবেশটা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।
চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, সাধারণত শুক্র ও শনিবার বন্ধের দিন চিড়িয়াখানায় ২০ থেকে ৩০ হাজার দর্শনার্থী ভেতরে প্রবেশ করে থাকে। ঈদের দ্বিতীয় দিন- লক্ষাধিক দর্শনার্থী প্রবেশ করেছে। তৃতীয় দিনও দর্শনার্থীর চাপ আরও বেশি হবে। এমনটাই আমরা আশা করছি। এজন্য বিশেষ কারণ ছাড়া কাউকে ছুটি দেওয়া হয়নি।
অপরদিকে, হাতিরঝিল এলাকা হাজার-হাজার দর্শনার্থীদের মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। বুধবার দুপুর থেকে শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত মানুষের ভিড়ে জমজমাট হয়ে উঠে এলাকাটি। হাতিরঝিলের গুলশান, এফডিসি ও রামপুরা প্রান্ত থেকে নৌকা বা স্পিড বোটে চড়ে ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। ঈদুল ফিতরকে ঘিরে হাতিরঝিলে দিনে ও রাতে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে।
ঈদের তৃতীয় দিনে শ্যামলীর ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্কে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। পার্কটিতে প্রবেশমূল্য ১০০ টাকা, আর ভেতরে রয়েছে প্রায় ৫০টি রাইড। প্রবেশের পরই শোনা যায়, ‘আমাদের দেশটি স্বপ্নপুরী, সাথী মোদের ফুলপরি…’ গানটি, আর চক্রাকার রাইডে শিশুদের উচ্ছ্বাস।
ফ্যান্টাসি কিংডম কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ঈদ উপলক্ষে তিনটি নতুন রাইড চালু করেছে—ড্রপ অ্যান্ড টুইস্ট রাইড, টপ স্পিন রাইড ও ভিআর ৩৬০ রাইড। ছোটদের জন্যও নতুন রাইড রয়েছে। এখানকার বেশিরভাগ রাইডগুলোতে শিশুদের অংশগ্রহণ ছিলো চোখে পড়ার মতো। শিশুদের পাশাপাশি রাইডে চড়ছেন বড়রাও।
পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে ইনডোর থিম পার্ক টগি ওয়ার্ল্ড ছোটদের জন্য নানা ধরনের বিনোদন সুবিধা দিচ্ছে। এখানে ১৫০টির বেশি রাইড ও গেম রয়েছে।
ঢাকার অদূরে সাভারে অবস্থিত নন্দন পার্ক বৃহত্তম বিনোদনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি। নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশে থাকা এ পার্কে ৫০০ থেকে ৭ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন প্যাকেজ রয়েছে। ওয়াটার ওয়ার্ল্ডসহ বিভিন্ন রাইড আলাদা টিকিটের মাধ্যমে উপভোগ করা যায়।
ইনডোর বিনোদনের আরেক জনপ্রিয় জায়গা বাবুল্যান্ড। এখানে কার সিটি, ট্রাম্পোলিন, বল পুলসহ বিভিন্ন রাইড রয়েছে। বাবুল্যান্ডের প্লে-গ্রাউন্ডে ১০ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে। মাত্র ৪০০-৫০০ টাকায় দুই ঘণ্টা খেলার সুযোগ মেলে।
রাজধানীর মিরপুর-২, মিরপুর-১২, ধানমন্ডি, গ্রিনরোড, বাড্ডা, ওয়ারী, উত্তরা, লক্ষ্মীবাজার, শেওড়াপাড়া এবং নারায়ণগঞ্জে বাবুল্যান্ডের শাখা রয়েছে।
নগরবাসীর স্বপ্নের মেট্রোর ভ্রমণ করতে দর্শনার্থীতে উপচে পড়া ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে অনেকেই পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে ছুটে এসেছেন মেট্রোরেলে ভ্রমণসহ ঈদ আনন্দে উপভোগ করতে। উত্তরার উত্তর মেট্রোরেল স্টেশন এবং আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশন এবং মতিঝিল স্টেশনে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘরের কাউন্টার ম্যানেজার মো. জাকারিয়া হোসেন বলেন, ঈদের দ্বিতীয় দিনে প্রায় ২৫ হাজার দর্শনার্থী এসেছিল। বিকেলে ভিড় আরও বেড়েছিল। এবারের ঈদে দর্শনার্থীর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বেশি।
তিনি জানান, জাদুঘরে ২৫টির মতো রাইড রয়েছে, আর প্রবেশমূল্য মাত্র ৫০ টাকা।জিয়া উদ্যানে আসা দর্শনার্থী সুমি রহমান বলেন, প্রতিবছরই এই পরিস্থিতি হয়, কিন্তু এবার ভিড় আরও বেশি মনে হচ্ছে। অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়, খাবারের দোকানগুলোতেও প্রচণ্ড ভিড় থাকে।

আরও পড়ুন