শুক্রবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
দেশের জ্বালানি তেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) বছরে প্রায় ৭০ লাখ টন জ্বালানি তেল বাজারজাত করে। এই বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেলের অন্তত ৮২ শতাংশ পরিবাহিত হয় নৌপথে। ১০ শতাংশ পরিবাহিত হয় রেলপথ এবং ৮ শতাংশ সড়ক পথে। গত বছর বিপিসি প্রায় ৫৪ লাখ টন জ্বালানি তেল নৌপথে পরিবহন করে। নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনের এই বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হয় সংগঠিত বিরাট একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। ছাত্র–গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাওয়ার আশা করা হলেও পুরানো রাঘববোয়ালেরা রয়েছে বহাল তবিয়তে। অভিযোগ রয়েছে, বেসরকারি অয়েল ট্যাংকারের ( জাহাজ) মাধ্যমে এই বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল পরিবহনকালে কোটি কোটি টাকার তেল চুরিসহ নানা অপকর্মের ঘটনা ঘটে আসছে বছরের পর বছর ধরে। সংঘবদ্ধ এই সিন্ডিকেটে বেসরকারি জাহাজ মালিক, বিপিসি এবং তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাকর্মীরাও রয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের জ্বালানি তেল আমদানি থেকে বাজারজাত পর্যন্ত পুরো কার্যক্রমই বিপিসির নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। বিপিসির নিয়ন্ত্রণাধীন পদ্মা অয়েল কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম এবং যমুনা অয়েল কোম্পানি দেশব্যাপী জ্বালানি তেল বাজারজাত করে। আমদানিকৃত জ্বালানি তেল উপরোক্ত তিনটি তেল বিপণন কোম্পানির মাধ্যমে সারাদেশে সাপ্লাই চেইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছানো হয়। দেশে জ্বালানি তেলের প্রধান ডিপো চট্টগ্রামে। এখান থেকে সারাদেশে জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয়। মোট চাহিদার অন্ততঃ ৮২ শতাংশ জ্বালানি তেল নৌপথে অয়েল ট্যাংকারের মাধ্যমে
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহন করা হয়। বহু বছর ধরে দেশের নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনের বিষয়টি বেসরকারি জাহাজের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। এক সময় জাপানের তৈরি বেসরকারি অয়েল ট্যাংকারে জ্বালানি তেল পরিবহন করা হতো। ওই সময়ও জাহাজ থেকে তেল চুরি ওপেন সিক্রেট ছিল। নদীর মাঝখানে তেল চুরি করে জাহাজে নদীর পানি ভরে দেয়ার মতো বহু ঘটনাও অতীতে ঘটেছে। এক পর্যায়ে এসে প্রায় ৭০টি জাপানি জাহাজকে বয়সের কারণ দেখিয়ে বহর থেকে বের করে দেয়া হয়। নতুন করে নেয়া হয় দেশীয় জাহাজ।