পেশাদার ক্রীড়াবিদদের জীবনে উৎসব বা ব্যক্তিগত আবেগের চেয়ে মাঠের চ্যালেঞ্জই মুখ্য। নিগার সুলতানাও সেটিই তুলে ধরেছেন, যেখানে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার লক্ষ্যে ঈদের আনন্দও তারা বিসর্জন দিয়েছেন।
আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে আইসিসি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। তবে সরাসরি মূল পর্বে জায়গা করে নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। আইসিসি উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপে সপ্তম স্থানে থেকে শেষ করায় এবার তাদের খেলতে হবে বাছাইপর্ব।
এই বাছাইপর্ব শুরু হচ্ছে আগামী বুধবার, যেখানে পাকিস্তানের ছয় দলের সঙ্গে লড়তে হবে বাংলাদেশকে। বেশ কয়েক দিন ধরেই কঠোর পরিশ্রমে ব্যস্ত রয়েছে দল। বাছাইপর্বকে সামনে রেখে গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব উতরে মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ নারী দল। এবারও একই লক্ষ্য নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিগাররা। দেশ ছাড়ার আগে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বকাপের মঞ্চে ফেরার লক্ষ্যে ঈদের আনন্দও তারা উৎসর্গ করেছেন প্রস্তুতির জন্য, ‘গতবারও আমাদের কোয়ালিফাই খেলেই ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলতে হয়েছে। এবারও একই ব্যাপার। সুযোগ ছিল আমাদের সামনে (সরাসরি খেলার), তবে আমরা পূরণ করতে পারিনি। তার পরও বাছাইয়ে যদি ভালো খেলতে পারি, দলের জন্য ভালো। সবার প্রত্যাশাও সে রকম যে, আমরা যেন ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে পারি।’
ঈদে বাড়ি না যেতে পারলেও দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আগে দল হয়ে থাকতে চেয়েছেন বলে জানান অধিনায়ক নিগার, ‘প্রস্তুতির জন্য আমরা ঈদে বাসায় যেতে পারিনি। ঈদের আগের দিনও অনুশীলন করতে হয়েছে। সবাই জানে, দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই টুর্নামেন্ট। কারণ, একটা দল যখন আইসিসির বড় আসর খেলে, মানুষ তখন ভিন্ন দৃষ্টিতে তা দেখে। পাশাপাশি আইসিসির কাছ থেকেও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা আসে যখন একটা দল ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলে।’
গত বিশ্বকাপে খেলার পথ ধরে আইসিসি উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো ঠাঁই মিলেছিল আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর সূচিতে। আরও যে প্রাপ্তিগুলো ছিল, সবই ছিল দারুণ ইতিবাচক। এবারও তাই বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে মরিয়া নিগার, ‘আমাদের জন্য, আমাদের ক্যারিয়ারের জন্য এটি অনেক বড় ব্যাপার। কারণ শেষবার আমরা যখন ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলেছি এবং এফটিপিতে জায়গা পেয়েছি, তখন কিন্তু আমাদের ক্রিকেটের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। সম্মানের দিক থেকে বলুন, আর্থিক দিক থেকে, আমরা ক্রিকেটাররা অনেক বেশি লাভবান হয়েছি।’
এবারের বিশ্বকাপের সরাসরি খেলার দারুণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ১-১ সমতায় এনেও তৃতীয় ওয়ানডে হেরে বাছাইপর্বে যেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। সেই সিরিজ হেরে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার আশা এক রকম শেষ হয়ে গেছে নিগারদের। বাছাইয়ের ফেভারিট ক্যারিবিয়ানরাই। পাকিস্তানের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে বাংলাদেশে জয়-হার সমান সাতটি করে (একটি টাই)। এ ছাড়া আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডও চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। এমনকি বাছাইয়ের অন্য দল থাইল্যান্ডও অঘটন ঘটিয়ে দিতে পারে।