আমারদেশ২৪ ডেস্ক:
চাঁদপুরে মূল জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন নদীবেষ্টিত বেশ কয়েকটি দুর্গম চর। যেখানে চরবাসীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা ছিল সোনার হরিণ। স্থানীয়ভাবে সরকারি কী বেসরকারি, কোনো ধরনের স্বাস্থ্যসেবা পেত না তারা। তবে এসব চরবাসীর মধ্যে নতুন করে আশার আলো ছড়িয়েছে বাদশা আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতাল। এটি পরিচালনা করছে ফ্রেন্ডশিপ নামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। যেখানে মিলছে সবধরনের স্বাস্থ্যসেবা।গতকাল বুধবার দুপুরে হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিমপাড়ে চরে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রকল্পে ভাসমান হাসপাতাল উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা সচিব মো. সাইদুর রহমান।
বাদশা আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতালের লক্ষ্য একটাই চরের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। প্রাথমিক চিকিৎসা, রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে অস্ত্রোপচার। সবকিছুই মিলছে একেবারে বিনামূল্যে। এতে হাতের নাগালে এমন স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে দারুণ খুশি চরবাসী। বিলকিস বেগম নামে এক রোগী বলেন, এর আগে ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উত্তাল নদী পেরিয়ে জেলাশহর কিংবা রোগের ধরন দেখে ছুটতে হতো রাজধানী পর্যন্ত। তাও যাদের আর্থিক সামর্থ্য ছিল শুধুই তারা চিকিৎসা নিত। আমাদের ব্যববহুল চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব না। এখানে ভাসমান হাসপাতাল হওয়ায় খুব উপকার পেয়েছি। বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন করেছি। এক টাকা লাগেনি। আমি খুক খুশি।
ফ্রেন্ডশিপ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান জানান, প্রতিদিন ১৫০-২০০ রোগী এই ভাসমান হাসপাতালে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছে। ৭ জন চিকিৎসকসহ ৩২ সদস্যের ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতালটিতে কার্যক্রম চলছে। হাইমচরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩২ লাখ মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে এ কাজ করবে এই প্রকল্প। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, নদীবেষ্টিত দুর্গরাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় না। এ স্বাস্থ্যসেবা সৃষ্টি করার লক্ষ্যেই বাদশা আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতাল কার্যক্রম শুরু হয়। সব মানুষ যাতে চিকিৎসাসেবা পায় পরিকল্পিতভাবে আমাদের কার্যক্রম সেভাবেই চলছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মো. আবু জাফর, কিং আবদুল্লাহ হিউম্যানিটিরিয়ান ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোলায়মান আবদুল আজিজ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, পুলিশ সুপার আবদুর রকিবসহ সৌদি আরব সরকারের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল।