মঙ্গলবার , ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
নগরীর চট্রগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন বলুয়ার দিঘির পশ্চিম পাড়ে জাফর সওদাগর কলোনিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এক দম্পতির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আগুনে এই পরিবারের ছেলে–মেয়েসহ ৩ জন মারাত্মক ভাবে দগ্ধ হয়ে চমেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে সোমবার ১০ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে জাফর সওদাগর কলোনিতে সবুর সওদাগরের বস্তির ৫টি পরিবারের সব কিছু পুড়ে যায়। কলোনির টিনশেড ঘরে আগুন লাগলে ভোরে ঘুম থেকে উঠে মো. ইলিয়াস (৫৪) ও তার স্ত্রী পারভীন আক্তার (৪৫) ছাড়াও তাদের ছেলে সোহান, মেয়ে শাহিনা এবং ইলিয়াসের ভাই ফয়সাল বাথরুমে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানে ধোঁয়ার মধ্যে আটকা পড়েন তারা।
ওইখানেই মো. ইলিয়াস ও পারভীন আক্তার মারা যান। মো. ইলিয়াছ পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বলে জানান আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া কলোনির বাসিন্দা আমেনা বেগম। ছেলে সোহানও একই কাজ করেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, আগুনে অনেক ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়েছিল। আগুন নিভিয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থল ছাড়ার আগ মুহূর্তে জানা যায়, একটি সেমিপাকা ঘরের বাথরুমে পাঁচজন আটকা পড়েছেন।
তখন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের উদ্ধার করেন। এসময় মো. ইলিয়াস ও পারভীন আক্তারকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের ছেলে সোহান, মেয়ে শাহিনা আক্তার এবং ইলিয়াছের ভাই ফয়সালকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেলের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ ভর্তি করা হয়।
ভোরে যখন আগুন লাগে তখন বস্তির কেউ ঘুমে এবং কেউ সবে মাত্র ঘুম থেকে উঠেছেন বলে জানান কলোনির বাসিন্দা সাইফুল্লাহ। ফায়ার সার্ভস জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তার আগে ওই কলোনির সবুরের মালিকানাধীন পাঁচটি কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চন্দনপুরা ও নন্দনকানন স্টেশনের ৪টি ইউনিট সেখানে যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় তারা সকাল ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে কলোনির পাঁচটি কাঁচা ঘর পুড়ে গেছে।
ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে স্বামী–স্ত্রী ২ জনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। এতে ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি ও ৩৫ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিএমপি দক্ষিণের উপ কমিশনার শাকিলা সোলাতানা। এসময় সাথে ছিলেন কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার মাহফুজ ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল করিম।