নোটিশ: বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় সাইটটি শীঘ্রই সাসপেন্ড হয়ে যাবে, অনুগ্রহ পূর্বক যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।

রাশিয়া, চীন ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত যা বললেন।

Logo
সোমবার ২০ জানুয়ারি ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন রাশিয়া, চীন ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত। গতকাল রোববার তারা পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় উভয় দেশের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে রাষ্ট্রদূতরা। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন ও গণতান্ত্রিক পথ তৈরি করার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। এ ছাড়া পারস্পরিক সহযোগিতার কথা জানান রাষ্ট্রদূতরা। 

যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করে 
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বাংলাদেশের জনগণের জন্য সমৃদ্ধিশালী ও গণতান্ত্রিক পথ রচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি রোববার (১৯ জানুয়ারি) প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ সমর্থন জানান।

সাক্ষাতের পর যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, ‘রাষ্ট্রদূত জ্যাকবসন আমাদের দুই দেশের মধ্যে দৃঢ় অংশীদারিত্ব এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক পথ রচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।’

সাক্ষাতের সময় নতুন সিডিএ যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ এবং অগ্রাধিকার বিষয়ে আলোচনা করেন বলে পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছেযুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠেয় নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এই বৈঠকগুলো করেন।

এদিকে, একটি গণমাধ্যম বিবৃতিতে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উভয় পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মানবাধিকার, শ্রম সংস্কার এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনসহ পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও গভীর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সিডিএ-কে চলমান সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সম্মানিত প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার আলোকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।’

এতে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলোকে স্বীকৃতি এবং সমর্থনের জন্য পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানান।নতুন সিডিএ বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক রূপান্তরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রদূত জ্যাকবসন বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ও আর্থিক সংস্কারের মাধ্যমে স্থিতিশীল অর্থনীতি ও শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি অর্জনের বিষয়ে উচ্চ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সম্পর্ক আরও জোরদারে রাশিয়ার সমর্থন 
বাংলাদেশে রাশিয়ার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার খোজিন সমর্থন, সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে তার দেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে রাষ্ট্রদূত পারস্পরিক স্বার্থ এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সুযোগের মূল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত খোজিন ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে তার দায়িত্ব পালনের পর বাংলাদেশে আসার জন্য আনন্দ প্রকাশ করেন।

খোজিন বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে এসে খুবই অভিভূত। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারা সম্মানের বিষয়।’

ঢাকায় পৌঁছানোর পরপরই রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনের তাৎপর্য তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত। তিনি উল্লেখ করেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।খোজিন খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি এবং জাহাজ নির্মাণসহ সহযোগিতার অন্যান্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোর ওপরও জোর দেন।তিনি রাশিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগের জন্য বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করে

বাংলাদেশের জন্য সুদের হার কমাবে চীন 
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘চীন বাংলাদেশের জন্য ঋণের সুদের হার কমানোর জন্য ঢাকার অনুরোধ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে।’ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের নির্ধারিত চীন সফরের একদিন আগে তিনি রোববার এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের রাষ্ট্রদূত এখানে তৌহিদ হোসেনের সাথে দেখা করেন এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।বিবৃতিতে বলা হয়, বেইজিং ঢাকার পূর্ববর্তী অনুরোধের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের সাথে পানি প্রবাহ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের একটি বাস্তবায়ন পরিকল্পনা স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত।

তৌহিদ হোসেনের সাথে সাক্ষাতের সময় রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘চীন বাংলাদেশের সর্বকালের, সময়ের পরীক্ষিত বন্ধু এবং তারা দৃঢ়ভাবে সরকার নির্বিশেষে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।’

রাষ্ট্রদূত আরও জানান, আসন্ন সফরকালে চীনা পক্ষ বাংলাদেশের সাথে পানি প্রবাহ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের বাস্তবায়ন পরিকল্পনা স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এর আগে এ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল।চিনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘চীন বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের জন্য সবকিছু করবে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখবে। ইয়াও পুনর্ব্যক্ত করেছেন, চীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডাকে সম্মান করে।

তিনি আরও বলেন, চীন বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা, সংস্কার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং উন্নয়ন উদ্যোগের জন্য তার সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

 

আরও পড়ুন