প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৫৫
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশের শেখ পরিবারের জেনেটিক্যাল লাইন থাকায় ইংল্যান্ডে লেখাপড়া করে, সেখানে এমপি হওয়া শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। তিনি বলেন, টিউলিপ লেখাপড়া করেছেন ইংল্যান্ডে। ইংল্যান্ডের একজন এমপি, একজন জনপ্রতিনিধির এক টাকা এক পয়সা দুর্নীতি–এটা একটা স্বপ্নের বিষয়। কিন্তু তার জিন হচ্ছে বাংলাদেশের শেখ পরিবারের। ওখানে লেখাপড়া করে এমপি হওয়ার পরেও তার জেনেটিক্যাল যে লাইন এই লাইন তিনি ক্রস করতে পারেননি। তাই এই অভিযোগগুলো তার নামে বেরিয়ে আসছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এটিএম খালেদ (বীর প্রতীক)-এর ৪৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি।
তিনি বলেন, যেখানেই যাই শুধু ঘুরেফিরে শেখ হাসিনার যে মহা দুর্নীতি, একেবারে গ্যালাক্সি-সমান দুর্নীতি এইটা ছাড়া আর কোনো বক্তব্যই খুঁজে পাই না। দুর্নীতির যে বিভিন্ন ডাইমেনশন, দুর্নীতির যে বিভিন্ন মডেল– কোন মডেলটা ধরে কথা বলব? তার ভাগনা, ভাগনি, ছেলে, মেয়ে– কোনটা ধরে কথা বলব? রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প রাশিয়ার সাথে চুক্তি করেছে ৫০০ কোটি ডলার শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার যে ভাগনি, সে আবার ইংল্যান্ডের এমপি এবং সিটি-এমপির দায়িত্বে, তারা মালয়েশিয়ার এক ব্যাংক থেকে সেই ৫০০ কোটি ডলার তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে।
এই অভিযোগকে সুস্পষ্ট উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত একজন ব্যবসায়ী ফ্ল্যাট কিনে দিল একদম খুব অভিজাত পাড়ায়। আরেকজন আইনজীবী সে তার ছোটবোন রূপন্তিকে একটা ফ্ল্যাট কিনে দিল। আবার সেই ফ্ল্যাট রূপন্তি টিউলিপকে তার পরিবারসহ থাকার জন্য ব্যবস্থা করে দিল। এখন লন্ডনের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, ইংল্যান্ডের সব সংবাদমাধ্যমে এই কথাগুলো সব বেরিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, ওখানে জার্নালিজম খুব শক্ত। ওখানে হঠাৎ করে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে সংবাদপত্রে কেউ কিছু লিখতে পারে না। কিন্তু সেখানে লেখালেখি হচ্ছে। কারণ এগুলো সবই হচ্ছে শেখ হাসিনার একেকটা বীভৎস দুর্নীতির চিত্র। সেই চিত্রে আমরা কখনো লন্ডন কখনো নিউইয়র্ক কখনো জাপান কখনো মালয়েশিয়া কখনো দুবাই- বিভিন্ন জায়গা থেকে একটার পর একটা নিউজ আসছে।
ছাত্রদল নেতা এটিএম খালেদ (বীর প্রতীক)-কে হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তোলেন, মুক্তিযুদ্ধ কি শুধু আওয়ামী লীগ করেছে? মুক্তিযুদ্ধে কি শুধু আওয়ামী লীগের অবদান?
তিনি বলেন, মূলত একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধে রূপ নিল। কারণ যে অধিকারটুকু দেওয়ার কথা, নির্বাচনের যে ফলাফল প্রকাশ করার কথা সেই ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পরেও নির্বাচিত যারা হয়েছেন তাদেরকে সরকার গঠন করতে দেয়নি। ওটা করেছে ইয়াহিয়া খান, ওটা করেছে টিক্কা খান, ওটা করেছে জুলফিকার আলী ভুট্টো। তারা ছিল অন্য জাতি, অন্য দেশ। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের এই অবদান। সেখান সেনাবাহিনী যুদ্ধ করেছে, পুলিশ যুদ্ধ করেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যুদ্ধ করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, যদি বিচার বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা যাবে আওয়ামী লীগের সেখানে ভূমিকা অত্যন্ত কম। কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিতে পারেনি। যদি সত্যিকার অর্থেই মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে আন্তরিক থাকতো তাহলে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা তো তারা দিত। ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা আর ১৭ই এপ্রিল সরকার গঠন করা হল মুজিবনগরে। তার মানে তারা সকলেই দ্বিধান্বিত ছিলেন, অস্পষ্ট ছিলেন, কী করবেন কী করবেন না, এই ভাবনার মধ্যে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাউত্তর মনে করেছে যে, আমরাই থাকবো। আর আমাদের যারা বিরোধিতা করবে তারাই হচ্ছে দেশদ্রোহী। সেই চরিত্র শেষ দিন পর্যন্ত, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার দিন পর্যন্ত ছিল।