বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা সীমান্তে আর কোনও লাশ দেখতে চাই না। বাংলাদেশের যত নাগরিককে সীমান্তে লাশ করা হয়েছে তার বিচার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে করতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রাম শহরের কলেজ মোড়ে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচির শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সীমান্তে হুয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি যৌথভাবে পালন করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখা। কুড়িগ্রাম শহর থেকে যাত্রা করে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের দীঘির পাড় এলাকায় সমাবেশে মিলিত হবে পদযাত্রাটি। এরপর সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের শিকার কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানীর বাড়িতে যাবেন নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর ভারতের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে সারজিস বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র বিগত ৫৩ বছর ধরে একটি গোষ্ঠীকে ক্ষমতার চেয়ারে বসিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে যেভাবে কুক্ষিগত করে রেখেছিল, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ২০২৪ সালে তার মোক্ষম জবাব দিয়েছে।’
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতসহ পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের উদ্দেশে সারজিস বলেন, ‘ভারতসহ বিশ্বের সব দেশকে বলতে চাই, আজকের পর থেকে বাংলাদেশের কোনও নাগরিকের প্রতি যদি শকুনের দৃষ্টিতে তাকানোর চেষ্টা করে তবে সেই দৃষ্টি উপড়ে ফেলার জন্য বাংলাদেশের ছাত্র জনতাই যথেষ্ট। ছাত্র-জনতা আর কখনও নতজানু হওয়া মেনে নেবে না।’
‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি থেকে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবির বার্তা দিয়ে তরুণ এই সংগঠক বলেন, ‘আজকের পর থেকে আমাদের কোনও ভাই কিংবা বোন যদি কাঁটাতারে ঝুলে থাকে তাহলে আমাদের পরবর্তী মার্চ ওই কাঁটাতারের দিকে হবে। আর সেটা হলে আমাদের লক্ষ্য কাঁটাতার ভেদ করে যতদূর চোখ যায় তত দূর যাবে। যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে তার স্ফুলিঙ্গ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যাবে। আমরা এই বাংলাদেশের সীমান্তে আর কোনও লাশ দেখতে চাই না। সীমান্তে সব ধরণের মারণাস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।’
ফেলানীর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের নাম ফেলানীর নামে রাখার দাবি জানান সারজিস। পরে নাগেশ্বরীর সীমান্তবর্তী রামখানা ইউনিয়নের উদ্দেশে যাত্রা করে ‘মার্চ ফর ফেলানী’।
কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, দফতর সম্পাদক জাহিদ আহসান ও সমন্বয়ক রিফাত রিদওয়ানসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ।