আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশে এই আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে।
শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা,মেধা মেধা’,’আবু সাইদ মুগ্ধ,শেষ হয়নি যুদ্ধ’,’মেডিক্যালে কোটা কেন,প্রশাসন জবাব চাই’,’৪০ পেয়ে চান্স হয়,৭৩ কেন বাদ হয়’,’আমার সোনার বাংলায়,বৈষম্যের ঠাই নাই’ সহ নানা স্লোগান দেয়।
সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে অধ্যাপক ডা. মেজর (অব) আব্দুল ওহাব বলেন, ‘গতকাল মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ বা ৪১ পেয়ে অনেকে চান্স পেয়েছে অথচ এর ডাবল মার্ক পেয়েও অনেকে চান্স পায়নি,এটা কি বৈষম্য না?স্বৈরাচারের লোকেরা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে আর তাদের কুকীর্তির প্রকাশ হলো গতকালের রেজাল্ট।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা যেহেতু রাজপথে নামতে শিখেছ সেহেতু রাজপথ থেকেই তোমাকে অধিকার আদায় করে নিতে হবে। এছাড়াও আজকের মধ্যে সকল ধরনের কোটার বিলুপ্তি ও ফলাফল পুনঃপ্রকাশ করতে হবে বলে দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন তিনি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী দোহা বলেন, বৈষম্য বাতিল বাতিল চেয়ে কোটার সংস্কার চেয়ে একটি সফল আন্দোলনের পরেও মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় এধরণের বৈষম্যমূলক আচরণের কোনো দরকারই ছিলো না। যেখানে পাশ নম্বরই ৪০ সেখানে ৩৭ বা ৩৮ পেয়ে কীভাবে কেউ মেডিকেলে পড়তে পারে। আমরা আজকের মধ্যে এই বৈষম্যের সমাপ্তি দেখতে চাই।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী আবির হোসেন বলেন, ‘আগে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় কোটা বহাল থাকলেও সেখানে কাট মার্কের চেয়ে এক থেকে দুই মার্কের কম পেলে কোটায় চান্স পেত কিন্তু এই বছর নাতি-নাতনি কোটায় কাট মার্কের চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ নম্বর কম পেয়েও সরকারি মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে যা আমরা মেনে নিতে পারি না আর মানবোও না। আমরা মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল ধরনের কোটার বিলুপ্তি চাই। আজকের মধ্যে কোটা বৈষম্য বাতিল করে পুনরায় ফলাফল প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি।
মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ২৪ গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা এখনও দেখতে পাচ্ছি মেডিক্যালে অযৌক্তিক বৈষম্যমূলক কোটা চালু রয়েছে। অনেকে ৭২ নম্বর পেয়েও চান্স পায়নি অথচ অনেকে ৪০ পেয়েও চান্স পেয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও পোষ্য কোটাসহ অযৌক্তিক কিছু কোটা রয়ে গিয়েছে। আমরা চাই অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুনঃপ্রকাশ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা থেকে সকল প্রকার অযৌক্তিক কোটা বিলুপ্ত করতে হবে।
কবি জসিম উদদীন হলের শিক্ষার্থী নুরুল গণি সগীর বলেন, ২৪ এর রক্তের দাগ এখনও শুকায় এখনই আমরা পুনরায় বৈষম্যমূলক নীতির বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এত রক্তের পরও আমাদের আবার মাঠে নামতে হচ্ছে।
এসময় তিনি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের ডাকে আমাদের হাজার হাজার ভাই আহত ও নিহত হয়েছে। তাদের যে দাবি ছিলো সেই দাবি । আপনারা ওখানে বসে থাকার পরেও কেন আজ আমাদের কোটা নিরসনের দাবিতে রাস্তায় নামতে হচ্ছে।