নোটিশ: বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় সাইটটি শীঘ্রই সাসপেন্ড হয়ে যাবে, অনুগ্রহ পূর্বক যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।

অনেক সময় প্রকাশ্যেই ঘুষের লেনদেন হয়।

আমার দেশ ২৪
বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
ঘুষ সর্বাবস্থায় হারাম। অনেক সময় প্রকাশ্যেই ঘুষের লেনদেন হয়।এমন দৃশ্য আমাদের দেশে বেশ স্বাভাবিক। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ঘুষ আজ অন্য সব আয়ের মতোই খুব সহজ ও স্বাভাবিক বলে স্বীকৃত হচ্ছে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কেউই এটিকে ঘুষ বলতে নারাজ! তারা বরং এটিকে পকেট খরচ, দানাপানি, মালপানি, সম্মানী, হাতখরচ এসব নামে অভিহিত করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অবস্থা দেখে মনে হয়, নাম বদল করে তারা এ অপরাধকে কিছুটা হালকাভাবে দেখতে চান।
বিষের বোতলে মধুর লেবেল লাগালে যেমন মধু হয় না, মাটির টুকরায় স্বর্ণের প্রলেপ দিলে যেমন স্বর্ণ হয় না, তেমনি ঘুষকে যত মনোহরি ও চমকদার নাম নিয়েই ডাকা হোক না কেন, সেটা হারামই থেকে যায়। বৈধ হয় না।
নবীজি (সা.) আযদ গোত্রের ইবনে উতবিয়া নামের এক লোককে সদকা সংগ্রহের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। তিনি ফিরে এসে বললেন, এগুলো আপনাদের আর এগুলো আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘সে তার বাবার ঘরে কিংবা তার মায়ের ঘরে কেন বসে থাকল না। তখন সে দেখতে পেত তাকে কেউ হাদিয়া দেয় কি না? যার হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম, সদকার মাল থেকে স্বল্প পরিমাণও যে আত্মসাৎ করবে, সে তা কাঁধে করে কেয়ামত দিবসে উপস্থিত হবে। সেটা উট হলে তার আওয়াজ করবে, আর গাভি হলে হাম্বা হাম্বা করবে, আর বকরি হলে ভ্যা ভ্যা করতে থাকবে’ (বুখারি : ২৫৯৭)। এই হাদিস থেকে এ বিষয়টি দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ঘুষকে যত চটকদার নামেই নামকরণ করা হোক কিংবা জনগণ খুশি হয়ে প্রদান করুক অথবা কাজের বিনিময় হিসেবে দিয়ে থাকুক, অর্পিত দায়িত্ব পালনের বিনিময়ে বেতন-ভাতা বাদে অন্যের কাছ থেকে যে অতিরিক্ত অর্থ নিজের জন্য গ্রহণ করা হয় তার সবই ঘুষ এবং অন্যায়। এতে একপক্ষ অধিক লাভবান হয় এবং অন্যপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা ইসলাম ও সাধারণ বিবেক কোনোটিই সমর্থন করে না।
যারা ঘুষ নেয় বা দেয় তাদের উদ্দেশে রাসুল (সা.) সতর্ক করে বলেন, ‘ঘুষ গ্রহণকারী ও ঘুষ প্রদানকারী উভয়ের ওপর আল্লাহর লানত’ (ইবনে মাজাহ : ২৩১৩)। অপর হাদিসে এসেছে, ‘যে দেহের গোশত হারাম উপার্জনে গঠিত, তা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। হারাম ধন-সম্পদে গঠিত ও লালিতপালিত দেহের জন্য জাহান্নামই উপযোগী।’ (তিরমিজি : ৬১৪)
ঘুষ সমাজ ও জাতির অভিশাপ। এর আদান-প্রদান, লেনদেন অন্যায় ও অবিচার। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য করো। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না’ (সুরা মায়েদা : ২)। অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনেশুনে পাপ পন্থায় আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে শাসন কর্তৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না’ (সুরা বাকারা : ১৮৮)। অপরের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করে দুনিয়ায়ও সুখী হওয়া যায় না। মজলুম মানুষের অভিশাপে তার জীবন বিষাক্ত হয়ে ওঠে। মনের ভেতর অস্থিরতা বিরাজ করে।

আরও পড়ুন