জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক তা চাই না।গতকাল শুক্রবার বিকেলে রংপুর নগরীর সেনপাড়ায় নিজ বাসভবন দ্য স্কাই ভিউতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি দল, যারা দলের ভেতরে বাস করছে তারা খারাপ হতে পারে। আওয়ামী লীগ একটি গাড়ি তার ড্রাইভার খারাপ হতে পারে কিন্তু গাড়িটা তো খারাপ না। তাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক এটা চাই না।
জিএম কাদের বলেন, হাসিনা ফ্যাসিবাদী আমরা দেখেছি। সে জোর করে অর্ধেক লোককে বাদ দিয়ে ইলেকশন করবে। জোর করে আমাদের নিয়ে আসবে, আবার কাউকে জোর করে বাদ দেবে। ইনারা জোর করে আমাদের বাদ দিয়ে ইলেকশন করবে। একটি বিশাল অঙ্কের জনসংখ্যাকে বাইরে রেখে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। এতে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না এবং সামনের দিকে দেশ আরও সংঘাতময় দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় চলে যাবে।
সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে অভিযোগ করে জিএম কাদের বলেন, আপনারা পারছেন না, অন্য কাউকে দায়িত্ব দিন। এগুলো থেকে উদ্ধার না হলে দেশের মানুষ চরম বিপদগ্রস্ত হতে পারে। এটা বললাম কেন, এটা বলাতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- এটা মনে করেছে তারা। এজন্য আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি এর আগে দুটি লুব্রিকেটিভ মন্ত্রণালয় বাণিজ্য ও বিমানের দায়িত্ব পালন করেছি। ২০১৪ সালে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় শেখ হাসিনা আমার পেছনে সব এজেন্সি দিয়ে দুর্নীতি বের করতে চেষ্টা করে। কিন্তু তারা দুর্নীতি বের করতে পারেনি। কিন্তু এখন দুর্নীতি বের করছে আমি নাকি নমিনেশন, পদ-পদবি দিয়ে দুই হাজার-পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছি- এ হলো আমার দুর্নীতি। আমার মুখটা বন্ধ করার জন্য মানে শেখ হাসিনা যেটি করেছে ফ্যাসিবাদ, সেই নব্য ফ্যাসিবাদ এখন শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা যেটা করে আমাদের ঠেকানোর চেষ্টা করেছে- ধমক দিয়ে, ব্ল্যাকমেইল করে। এখন ওনারা আমাদের ব্ল্যাকমেইল করতে চাচ্ছে।
ইমেজ নষ্ট করতেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, তারা আমাকে দুর্নীতির মামলা দিয়ে সারাদিন-রাত টেলিভিশনে দেখিয়েছে যে, বিদেশে বাড়ি আছে, বের কর যাও।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু ঘনিষ্ঠজনরা এমন কিছু কাজকর্মে উৎসাহিত করছেন যেগুলো রাজনীতির নামে অপকৃতি এবং লুটতরাজ। পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। এটাও ওনাদের দায় যেহেতু ঢালাওভাবে সমস্ত পুলিশকে তারা দোসর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগের অপব্যবহার করা হচ্ছে। কতগুলো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে সেগুলো নতুনভাবে সাজানো খুব সহজ হবে না।
এ সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলামসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।