আমারদেশ২৪ ডেস্কঃ
রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫
রাজধানীর দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর আদর্শবাগের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ওরফে সোহেল রানা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ‘স্মৃতি টেক্সটাইল’ নামে গার্মেন্টসের মালিক তিনি। চলাফেরা করেন হুন্দাই সানতাফে নামে বিলাসবহুল গাড়িতে। গার্মেন্টসটিতে কাজ করেন ৬০ জন শ্রমিক।
অথচ কয়েক বছর আগেও তার কিছুই ছিল না। আক্ষরিক অর্থে মনে হতে পারে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তিল তিল করে গড়ে তোলা গার্মেন্টস ব্যবসা ঘুরিয়ে দিয়েছে তার জীবনের মোড়। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে এভাবে নিজেকে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে জাদুর কাঠি হিসেবে কাজ করেছে ইয়াবা। কক্সবাজার থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিয়ে কোটিপতি বনে যাওয়া নজরুল চক্রে যুক্ত করেছেন নিজের বোন ও ভগ্নীপতিকেও।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে ঢাকার বাসায় ফেরার সময় গাড়ির চালক ও বোন-ভগ্নীপতিসহ গ্রেফতার হয়েছেন নজরুল। গ্রেফতার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সংশ্লিষ্টদের কাছে ইয়াবার টাকায় গ্রামের বাড়ি আড়াইহাজারে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে গ্রেফতার হওয়ার সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা দামের এক লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি) বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঢাকায় জব্দ হওয়া ইয়াবার সবচেয়ে বড় চালান এটি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিতে, বোন ও ভগ্নীপতিকে নিয়ে বিলাসবহুল গাড়িতে করে ইয়াবার চালান পরিবহন করত নজরুল। কেননা বোন ও ভগ্নীপতি থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মনে করবে কক্সবাজারে ট্যুর করে তারা ফিরছে।
গত শুক্রবার রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে ইয়াবার এ গডফাদারকে (নজরুল ইসলাম) তার বোন তানিয়া, ভগ্নীপতি (তানিয়ার স্বামী) মো. ফারুক ওরফে ওমর ফারুক ও তাদের গাড়িচালক মো. আল-মামুনকেসহ গ্রেফতার করে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়।
পরে শনিবার দুপুরে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক একেএম শওকত ইসলাম ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এ সময় ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) শামীম আহমেদ ও ঢাকা বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের ডিডি মো. খুরশিদ আলম উপস্থিত ছিলেন।