নোটিশ: বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় সাইটটি শীঘ্রই সাসপেন্ড হয়ে যাবে, অনুগ্রহ পূর্বক যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।

এবার বিএনপি সঙ্গে থাকবে বাম জোট দ্রুত নির্বাচন ইস্যু। 

নিউজ ডোস্ক:
সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে থাকবে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এমনকি নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি নিয়েও তারা মাঠে নামতে পারে। একই সঙ্গে সংস্কারের নামে নির্বাচনের জন্য কালক্ষেপণও সহ্য করবে না তারা। রোববার বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে বিএনপি ও বাম জোটের নেতাদের মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সিপিবি ও বাসদের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে দলটি। যদিও বৈঠকটিকে অনানুষ্ঠানিক বলে দাবি করেছেন বিএনপি ও বাম নেতারা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সিপিবির উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহ-সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন।
সূত্র জানায়, ডিসেম্বরের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায়ের লক্ষে বিএনপি বাম ও প্রগতিশীল দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। এই বৈঠক তারই অংশ। নির্বাচনের দাবিতে শিগগিরই আলোচনার মাধ্যমে মাঠে নামার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তারা বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রস্তাব উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তবে জনমতের অভাবে এটি টিকবে না। সংস্কারের জন্য সংসদের প্রয়োজন, তাই দ্রুত কিছু সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। বাকি সংস্কার পরবর্তী সংসদে সম্পন্ন হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে নিরপেক্ষতা হারিয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। নির্বাচনের দিকে না গেলে এই সরকারের পরিণতিও খারাপ হতে পারে। প্রয়োজনে বিএনপি ও বাম দলগুলো যুগপৎ কর্মসূচিতে যাবে।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা গণমাধ্যমকে জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহা: ইউনূসের ডিসেম্বর বা জুনের মধ্যে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে তারা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। এর ব্যত্যয় হলে যুগপৎ কর্মসূচির পথে হাঁটতে পারে তারা। নেতারা বলেন, ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। এরশাদের পতনের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব হলে এই সরকারের সমস্যা কোথায়? তারা মনে করেন, একটি অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার দেশটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। আরেকটি অনির্বাচিত সরকার দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে। এমনকি সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যেও নির্বাচন সম্ভব বলেও তারা মনে করেন।

তারা আরও বলেন, সংস্কারের নামে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্ব করার সঠিক হবে না। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা তার সুযোগ নেবে। সংস্কার ও নির্বাচনকে প্রতিপক্ষ ভাবার সুযোগ নেই। এ জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো দ্রুত শেষ করে নির্বাচন আয়োজন করা দরকার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, এটি প্রথম অনানুষ্ঠানিক বৈঠক। আপাতত আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে আছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম বৈঠকের বিষয়ে সময়ের আলোকে বলেন, বিএনপির সঙ্গে আমাদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনায় আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন যাতে হয় সে বিষয়ে কথা বলেছি। তিনি বলেন, কেউ কেউ বলছেন সংস্কার করে নির্বাচন। আমরাও সংস্কারের পক্ষে। কিন্তু সংস্কার করতে হলে জনমতের বিষয় আছে। সেটি পার্লামেন্ট ছাড়া হয় না। ফলে কিছু কিছু সংস্কার করে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দিতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে আমরা একমত হয়েছি। বিএনপি নির্বাচনের দাবিতে মাঠে থাকবে। আমরাও নির্বাচনের দাবিতে মাঠে আছি। মানুষের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। প্রকারান্তরে জনমতকে তোয়াক্কা না করলে তার পরিণতি খারাপ হবে। শিগগিরই বিএনপির সঙ্গে আবারও বসব। সেখানে গণতান্ত্রিক বাম জোটের নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম বলেন, ১৫ বছরের ক্ষোভ ৫ আগস্টে মানুষ প্রকাশ করেছে। সেখানে মানুষের মূল আকাক্সক্ষা ছিল ভোট দিতে পারেনি। ১৪, ১৮ এবং ২৪ সালে। মানুষ চায় গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকার। এখন যারা সংস্কারের নামে নির্বাচন দেরি করিয়ে গণপরিষদ নির্বাচন বা অন্য যেগুলো আনছে, তারা এন্টি ডেমোক্রেটিক ফোর্স।

আরও পড়ুন