নিউজ ডেস্ক: চট্রগ্রাম।
বৃহস্পতিবার , ১০ এপ্রিল, ২০২৫
বিদেশী বিনিয়োগের বড় সম্ভাবনায় এগুচ্ছে কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরে প্রতিষ্ঠিত কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড)। যাত্রা শুরুর পর থেকে এই পর্যন্ত জুতা, পোশাক রপ্তানিসহ বিভিন্ন খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা রপ্তানির মাধ্যমে সংস্থাটি পৌঁছে গেছে অনন্য উচ্চতায়। বিনিয়োগ সম্মেলন শেষে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বড় ধরনের বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাব মিলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিল্পায়নে অসামান্য এই অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে কেইপিজেডের প্রতিষ্ঠাতা কিহাক সাংকে সম্মানসূচক বাংলাদেশী নাগরিকত্ব (অনারারি সিটিজেনশিপ) প্রদানের মাধ্যমে সেই সম্ভাবনা আরো জোরালো হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আগামী ২ বছরের মধ্যে কেইপিজেডের চলমান শিল্পকারখানা গুলো উৎপাদনে গেলে কর্মরত শ্রমিক সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ৭০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
জানা যায়, কিহাক সাং এর হাত ধরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর ২ হাজার ৪৯২ একর জায়গাজুড়ে কেইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৯ সালে প্রকল্পটি উদ্বোধন হলেও ২০১১ সালে কেইপিজেডে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন শুরু হয়। ৭৮ বছর বয়সী কিহাক সাং জীবনের একটি বড় অংশ কাটিয়েছে কেইপিজেডের এই স্বপ্ন ঘিরে। আশির দশকে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প কোটামুক্ত সুবিধা পেত। এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানির সুবিধা নিতে ১৯৮০ সালের মে মাসে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসেন কিহাক সাং।
বাংলাদেশি কয়েকজন অংশীদার নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ইয়াংওয়ান বাংলাদেশ লিমিটেড নামের কারখানা। তার প্রতিষ্ঠিত ইয়ংওয়ান থেকে এক সময় কেইপিজেড নামে রপ্তানি প্রক্রিয়া জোনের যাত্রা শুরু হয়। কেইপিজেড সূত্র জানায়, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য সব ধরনের অবকাঠামো সুবিধা নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা সরেজমিন পরিদর্শন করে কেইপিজেড চেয়ারম্যান কিহাক সাং এর সাথে কথা বলেছেন। তুলনামূলক কম মজুরি, বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ ও অবকাঠামোগত সুবিধার কারণে কেইপিজেডে বিনিয়োগে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
জানা যায়, কেইপিজেডের নিজস্ব ৪৮ শিল্প কারখানার পাশাপাশি বর্তমানে আমেরিকা ও জার্মানির তিনটি কারখানা চালু রয়েছে। আমেরিকাভিত্তিক এমেরিকান এফার্ড সুতা উৎপাদন ও পেঙার বাংলাদেশ এঙেসরিজ উৎপাদনে জড়িত। জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এনজেল বার্ডের বিনিয়োগ রয়েছে গার্মেন্টস খাতে। তিন প্রতিষ্ঠান মিলে ১৪ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে আইটিখাতে বড় বিনিয়োগের আশা করছে কেইপিজেড। আগামী ২৫ এপ্রিল একটি প্রতিনিধি দল কেইপিজেডের আইটি প্রতিষ্ঠান টেকভিশন পরিদর্শনের কথা রয়েছে।
নিজস্ব বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে প্রতিবছরই এগিয়ে যাচ্ছে কেইপিজেড। ২০১২ সালে উৎপাদন শুরুর পর ১৩ বছরে রপ্তানি ছাড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম ৭ বছরে রপ্তানি ছিল মাত্র ৫ লাখ ডলার। মূলত গত ৫ বছরে রপ্তানিতে কেইপিজেডে ঈর্ষনীয় সাফল্য এসেছে। চলতি অর্থ বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা বলে জানা গেছে।