আমারদেশ২৪ ডেস্ক:
বুধবার ২১ মে, ২০২৫
বাসার চুলায় গ্যাস না পেয়ে আন্দোলন করেছেন রাজধানী কাজলার স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্যাসের দাবিতে বুধবার (২১ মে) সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজলা অংশ থেকে অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। এতে ওই এলাকায় প্রচণ্ড যানজটের সৃস্টি হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজলার পার মোড়ের কাছে সম্প্রতি সুলেমান মিয়ার সিএনজি রিফুয়েলিং পাম্পটি চালু করা হয়। পাম্পটি চালুর পর থেকেই তাদের সমস্যার শুরু। নতুন মেশিন দিয়ে গ্যাস পাইপলাইনের পুরো গ্যাস টেনে নেয় পাম্পটি। তাতে দিনের বেশিরভাগ সময় তিতাসের আবাসিক সংযোগে গ্যাস থাকে না।
আগে সন্ধ্যার পর কিছুটা গ্যাস পাওয়া গেলেও এর আগে বৃহস্পতিবার থেকে চুলা জ্বলছে না এলাকার কোনো বাসায়। এলাকায় গ্যাস না থাকার কথা জানিয়ে স্থানীয়রা তিতাস কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাচ্ছেন না, এমন দাবি আন্দোলনকারীদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্যাসের দাবিতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মূল সড়কে আসার আহ্বান জানান স্থানীয় কয়েকজন যুবক। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে শ খানেক নারী-পুরুষ সড়কে নামলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এক পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এলে আন্দোলনকারীরা তাদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘প্রতিশ্রুতি’ পেয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজলা অংশ থেকে অবরোধ তুলে নেন গ্যাসের দাবিতে আন্দোলনে নামা স্থানীয় বাসিন্দারা। আগামী ১৫ দিন ওই এলাকার সিএনজি রিফুয়েলিং পাম্পটি বন্ধ প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর বেলা ২টার দিকে তারা সড়ক ছাড়েন। ফলে তিন ঘণ্টা পর ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনে যোগ দেওয়া কাজলার পারের বাসিন্দা মোহাম্মদ হান্নান বলেন, পুলিশ আমাদের বলেছে, কাজলার সুলেমান মিয়ার সিএনজি পাম্ম আগামী ১৫ দিন বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে গ্যাস সমস্যার সমাধান করে লাগলে আবার আলোচনা করবে। পুলিশ কথা দেওয়ায় আমরা রাস্তা ছাইড়া দিছি।
স্থানীয় গৃহিনী সেতারা খাতুন বলেন, স্বামী তার ব্যাংকার, সকাল ৭টার মধ্যে তার জন্য দুপুরের খাবার করে দিতে হয়।আগে রাতে রান্না করে রাখতাম, এখন গ্যাস নাই। প্রথম দুই দিন মনে করছিলাম, লাইনে সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। দেখি এক সপ্তাহ হল গ্যাসের কোনো খবর নাই। বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার গ্যাস আর আলাদা চুলা কিনতে হলো।
স্থানীয়রা বুধবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজলা অংশ অবরোধ করলে তিতাস এক বার্তায় জানায়, এদিন দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মোট পাঁচ ঘণ্টা দোলাইরপার থেকে দনিয়া শনির আখড়া সড়কের উভয়পাশে সকল শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এছাড়া আশপাশেরও এলাকাতেও গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে।
এদিকে, স্থানীয়রা বলছেন, কাজলা এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ নিয়ে কোনো প্রকার ঘোষণা বা এলাকায় মাইকিং করেনি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসির ফেইসবুক পেইজেও ওই এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখার কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
তিতাস কর্তৃপক্ষের জরুরি সেবা বিভাগের কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষকে সময়ে সময়ে পুরো চিত্র জানিয়ে দেই। কখন কোন এলাকায় গ্যাসের চাপ কেমন থাকবে। মূলত মেইন লাইনে গ্যাসের চাপ কম থাকায় যাত্রাবাড়ী এলাকায় গ্যাস যাচ্ছে না। যে পরিমাণ গ্যাস দরকার তা তো আসছে না লাইনে।