নোটিশ: বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় সাইটটি শীঘ্রই সাসপেন্ড হয়ে যাবে, অনুগ্রহ পূর্বক যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।

প্রধান শিক্ষক একটি শ্রেণি কক্ষে সহপাঠী নিয়ে জুয়া খেলার  ভিডিও ভাইরাল।

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

রবিবার ০৪ মে, ২০২৫

চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নন্থ রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একটি শ্রেণি কক্ষের ভেতরে কয়েকজন সহপাঠী নিয়ে জুয়া খেলার  ভিডও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের এই ভিডিও ফুটেজের ঘটনা নিয়ে পুরো উপজেলাজুড়ে এখন তোলপাড় চলছে।

এর আগে শুক্রবার (২ মে) দুপুর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে বেঞ্চে বসাবস্থায় প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনকে জুয়া খেলতে দেখা যাচ্ছে। তার পেছনের দেয়ালে কালো রংয়ের ব্ল্যাকবোর্ড ও হাতের ডানপাশে লাল-সবুজের রং করা স্কাউটের বেশকিছু বাঁশও দেখা গেছে। এছাড়াও বেঞ্চে বসা হাতের বামপাশে প্লাস্টিকের একটি পানির বোতলও দেখা যায়। পাশাপাশি ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও ফুটেজে ১জন ব্যক্তিকে খাটে বা বেঞ্চের মধ্যে শুয়ে থাকায় তার দুটি পা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ৩২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জুয়া খেলার ফাঁকে সিগারেট টানতেই দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে জুয়া খেলা, মাতলামিসহ বহু অভিযোগ আছে। এছাড়াও তিনি মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করে নানা ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। কিন্তু আমরা এতদিন প্রমাণ পাইনি। এখন তার অপকর্মের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এতে প্রমাণ মিলেছে। এ ধরণের প্রধান শিক্ষক স্কুলে থাকার কোন ধরণের বৈধতা নেই। আমাদের সন্তানেরা তার কাছ থেকে কি শিখবে? একজন প্রধান শিক্ষকের কাছে আমরা এই ধরণের অপরাধ ও অনৈতিক আচরণ কখনো কাম্য মনে করি না। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত প্রদক্ষেপ গ্রহণের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের কাছে ভাইরাল হওয়া ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমাদের পিকনিকের একটি ভিডিও। তিন বছর পূর্বে স্কুল থেকে মেহেরপুরে আমরা পিকনিকে গিয়েছিলাম। ওই সময়ে কে বা কারা খেলার সময় ভিডিওটা করেছে। এটি আমার বিদ্যালয়ের ভিডিও না। মূলত বিদ্যালয়ের একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে আমার মানসম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য এটা করেছেন। আমার বিদ্যালয়ে এ ধরণের কোন শ্রেণি কক্ষ নেই। চাইলে আপনি এসে দেখে যেতে পারেন।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহেদুল মোস্তফা’র কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জুয়া খেলার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দেখেছি। ভিড়িওটি দেখার পরে বিদ্যালয়ের অপরাপর শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তারা বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের এহেন কর্মকান্ডের বিষয়টি বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধিকে অবহিত করা হয়। বিষয়টি সম্পর্কে তদন্তপূর্বক বিধিমতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ইউএনও মহোদয় বিষয়টি আমাকে জানালে তাৎক্ষণিক ভাবে প্রধান শিক্ষক আনোয়ারের কাছে ফোন করে জানতে চাই। তখন তিনি ভিডিও ফুটেজটি সম্পর্কে স্কুল থেকে মেহেরপুরে পিকনিকের বলে জানিয়েছেন। তারপরও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে শিক্ষা কর্মকর্তা জানান।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো, আতিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমাকে কেউ জানায়নি। তারপরও প্রধান শিক্ষকের বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতিকে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

আরও পড়ুন