আন্তজার্তিক ডেস্ক:
বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে নিরাপদ অভিবাসন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণসহ শ্রমবাজার সম্পর্কিত তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা শুরু হয়েছে।ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আজ বুধবার (২১ মে) এই সভা শুরু হয়।
২ দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সভা এরই মধ্যে সফল হয়েছে এবং যেকোনো সময় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া শ্রমিক পাঠানো শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার মালয়েশিয়া সরকারের ১৪ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসেন। মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ড. ম. শাহরিন বিন উমর। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নেতৃত্বে দিচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফি সিদ্দিকি ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া। বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সভা শেষে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে শ্রমিক নেওয়া সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র সই হবে। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ায় আগামী ৬ বছরে প্রায় ১২ লাখ শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফি সিদ্দিকি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথম ধাপে গত বছর শ্রমবাজারটি বন্ধ হওয়ার কারণে সব প্রক্রিয়া শেষ করেও যেতে না পারাদের প্রায় ৮ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যাবেন। তাদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় বোয়েসেলের মাধ্যমে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অধিক সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি থাকলেও মালয়েশিয়া সরকার সীমিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক নিতে আগ্রহী। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় আলোচনা চলছে।
ড. লুৎফি সিদ্দিকি আরও বলেন, বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা দেওয়ার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকার এরই মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করছে। মালয়েশিয়া সরকার খুবই আন্তরিকভাবে দেখছে কর্মী নেওয়ার বিষয়টি। ২ পক্ষই স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চায়।
বৈঠক সূত্রে জানাগেছে, অবৈধ পন্থায় শ্রমিক গেলে তারা মালয়েশিয়ার বনে জঙ্গলে পালিয়ে বেড়াতে হয়। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। মামলা হয়, কারাভোগ করে। তাই অবৈধ প্রক্রিয়ায় শ্রমিক না নিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়টি সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে দেখছে। শ্রমিক গ্রহণকারী দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া সরকার যেসব শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার সেসব শর্ত প্রতিপালনের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
এর আগে গত ১৪ মে মালয়েশয়ার পুত্রজায়ায় দেশটির স্বরাষ্ট্র ও মানবসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সভায় অংশ নেন বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফি সিদ্দিকি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া এবং উপসচিব সারোয়ার আলম।
ওই সভায় বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিতে অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে যে মামলা রয়েছে সেগুলোর নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে। মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ বলছে, বিভিন্ন এজেন্সির সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মানব পাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ‘হয়রানিমূলক’ মামলা হয়েছে, যা মালয়েশিয়া সরকারের অভিবাসন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।