ঢাকার গুলশানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত সুমনের গ্রামের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শালাইপুর গ্রামে চলছে শোকের মাতম। শান্ত ও ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত সুমনকে গুলি করে হত্যার খবর জানার পর থেকে প্রতিবেশী ও স্বজনরা হতবাক হয়ে পড়েছেন। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন সুমনের পরিবার ও স্থানীয়রা।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সুমনের গ্রামের বাড়ি শালাইপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের মা, ঘরের বারান্দায় বসে ছেলের শোকে আহাজারি করছেন। একমাত্র বোনসহ প্রতিবেশীরা সুমনের মরদেহ ঢাকা থেকে কখন নিয়ে আসবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ঢাকায় মরদেহের সঙ্গে থাকা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
সুমনের মা, নিহত সুমনের স্মৃতিচারণ করে বলছিলেন, আর কয়েক দিন পর সুমন বাড়িতে আসার কথা ছিল। গত বুধবার ফোন দিয়ে সুমন জানিয়েছিল, সে এবার ঈদে গ্রামের বাড়িতে আসবে। এ সময় তিনি আহাজারি করে বলেন, আমার বাবা ঠিকই আসতেছে, তবে এবার লাশ হয়ে। সুমনকে ডিস ব্যবসার জেরে ৬-৭ টি মামলা দিয়ে হয়রানি করার কথাও বলেন তিনি।
প্রতিবেশী রহিম মিয়া জানান, সুমনের বাবার নাম মাহফুজার রহমান। সুমন ২ ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড়। সুমনের নানার বাড়ি ঢাকাতে হওয়ায় সুমন ছোট থেকে নানাবাড়িতে থাকত এবং সে ঢাকাতে বিয়ে করে সেখানেই থাকে। ইয়াস (১০) এবং সুমাইয়া (৭) নামে সুমনের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। সুমন গুলশান এলাকায় ডিস ব্যবসা করে। সরকার পতনের পর সুমনের ব্যবসায়িক পার্টনারদের সঙ্গে গণ্ডগোল চলছিল বলে শুনেছি। সম্ভবত সে কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
আতিয়ার নামে একজন জানান, সুমন ঢাকাতে থাকলেও ঈদ এবং বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে এসে পরিবারের সঙ্গে সময় দিতেন। যে কয় দিন গ্রামের বাড়িতে থাকেন, সবার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করতেন। নিয়মিত নামাজ পড়েন। এমন একটি ছেলেকে কেউ হত্যা করতে পারে, জানার পর অবাক হয়েছি।
যোগাযোগ করা হলে গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মারুফ আহমেদ জানান, ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, এর আগে বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে হাতিরঝিল সংলগ্ন পুলিশ প্লাজার সামনে সুমনকে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি করে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।