আমারদেশ২৪ ডেস্ক:
বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত ১৫ বছর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন অভিনেত্রী শমী কায়সার ও আওয়ামী লীগ নেতা মৃণাল কান্তি রায়। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বারবার তাদের ইজারা চুক্তি নবায়ন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বেবিচক। গত ৫ আগস্টের পরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে দুর্নীতি দমন কমিশন এবার নড়েচড়ে বসেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শমী কায়সার ও মৃণাল কান্তি রায়ের কাজ-সংক্রান্ত সব ধরনের নথি চেয়েছে দুদক বেবিচকের কাছে।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে তাদের আশীর্বাদপুষ্টদেরই বিমানবন্দরের বিজ্ঞাপনের জন্য বিলবোর্ড, লাউঞ্জ ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ দেওয়া হতো। এর বাইরে কেউ পেত না। এমনই আশীবার্দপুষ্ট হচ্ছেন অভিনেত্রী শমী কায়সার ও মৃণাল কান্তি রায়সহ কয়েকজন। গত ১৫ বছর ধরে শাহজালালে ধানসিঁড়ি নামে লাউঞ্জটি শমী কায়সারের নামে ইজারা দেওয়া হয়। সেটি তিনি নিজে পরিচালনা না করে সিটি ব্যাংককে ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে ২ কোটি টাকা আয় করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও তার ইজারা চুক্তি নবায়ন করা হয়। আর মৃণাল কান্তি রায় গত ৪ বছর ধরে শাহজালালের সবরকম ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করতেন। করোনাকালে দূরত্ব বজায় রাখার জন্য শাহজালালে চৌকোনা ছক এঁকেই বাগিয়ে নেন ২ কোটি টাকা। সিভিল অ্যাভিয়েশনের বড় বড় অনুষ্ঠানে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ মৃণাল কান্তি ছাড়া কাউকে দেওয়া হতো না। এ ছাড়া বেবিচক বিভিন্ন জনকে দামি সামগ্রী উপহার দিত। সেই কাজও করতেন মৃণাল কান্তি রায়। এ ছাড়া শমী কায়সারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ধানসিঁড়ি পরিচালিত ২৩৫২.৯১ বর্গফুট লাউঞ্জের (সিটি এমেক্স) ইজারা মূল্য কখনোই পূর্ণাঙ্গভাবে পরিশোধ করা হয়নি। বিশাল অঙ্কের অনাদায়ী বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে চূড়ান্তপত্র দিয়ে সময় দেওয়া হলেও আজ অবধি প্রতিষ্ঠানটি (ধানসিঁড়ি) বকেয়া পরিশোধ করেনি। বর্তমানে প্রায় ৮০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।
বেবিচকের একটি সূত্র জানায়, গত ১৭ এপ্রিল শমী কায়সার ও মৃণাল কান্তি রায়সহ অন্যান্যের ১৫ বছরে শত কোটি টাকা লুটপাট করার অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য নথি চেয়ে বেবিচককে চিঠি দিয়েছে।