নোটিশ: বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় সাইটটি শীঘ্রই সাসপেন্ড হয়ে যাবে, অনুগ্রহ পূর্বক যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।

বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ।

আমারদেশ২৪ ডেস্ক:
প্রকাশ: শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫

আর মাত্র দুদিন পর উদযাপিত হবে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশা। সর্বজনীন এ উৎসবের মধ্য দিয়ে নতুন বঙ্গাব্দ ১৪৩২ কে বরণ করে নেবে দেশবাসী। বৈশাখ বরণের অংশ হিসেবে মঙ্গল শোভাযাত্রা, পান্তা-ইলিশ খাওয়াসহ বিভিন্ন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এ উৎসব ঘিরে প্রতি বছরই কদর বাড়ে ইলিশের। তবে শঙ্কার খবর হলো, এবার বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। ফলে দামও চড়া। এ কারণে মধ্যবিত্তের পাত থেকে বাদ পড়তে পারে জাতীয় মাছটি। অগত্যা ইলিশের বিকল্প হিসেবে অন্য মাছ খুঁজছেন তারা। এ ছাড়া দাম আরও বাড়তে পারে- এমন শঙ্কায় অনেকেই সংরক্ষণ করছেন।

ক্রেতারা বলছেন, পহেলা বৈশাখে পান্তার সঙ্গে ইলিশ রাখা মধ্যবিত্তের নিয়মে পরিণত হয়েছে। তবে তাদের অভিযোগ, বাজারে সরবরাহ যেমন-তেমন উৎসব ঘিরে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, নদীর পানি কমে গেছে। এ ছাড়া জাটকা ধরা বন্ধ করা হয়েছে গত ৮ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। এ জন্য বাজারে সরবরাহ কম। ফলে কাঁচা মাছ (নতুন ইলিশ) নেই। এবার পুরোনো মাছ (ফ্রিজিং ইলিশ) বিক্রি করা হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের সংরক্ষণ করা ছোট আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে। আর ৬৫০ থেকে ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় এবং ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। এ ছাড়া যেসব ইলিশের ওজন এক কেজি সেসব বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। অন্যদিকে ১ কেজি ৩০০ গ্রাম বা রকমভেদে বড় আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায়। এ ছাড়া বড় আকারের ‘কাঁচা’ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকারও বেশি দামে।
কারওয়ান বাজারে সবুজ নামে এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে সময়ের আলোকে বলেন, বছরজুড়েই ইলিশের বাজার চড়া থাকে। পহেলা বৈশাখের উৎসব ঘিরে পান্তার সঙ্গে ইলিশ রাখা এখন যেন এক ধরনের নিয়ম হয়ে গেছে। এটুকু বিলাসিতা করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে মধ্যবিত্ত। তবে সরবরাহ কিছুটা কম থাকলেও মনে হয়েছে বৈশাখের আগেই কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে মাছ ব্যবসায়ীরা। জাটকা ধরা নিষিদ্ধকে আরেকটি অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়েছে মাছ ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশ না করে আরেক ক্রেতা সময়ের আলোকে বলেন, বৈশাখের উৎসব ঘিরে ইলিশ কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু চড়া দামের কারণে ইলিশের বিকল্প মাছ খুঁজছি। অন্যদিকে ইলিশ সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে নদীর পানি কমে যাওয়া এবং মাছ ধরা নিষিদ্ধকে দায়ী করছেন বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আশরাফ আলী সময়ের আলোকে বলেন, এখন ইলিশের জন্য সিজন নয়। নদীর পানি কমে গেছে। এ সময় শুধু জাটকা মাছ পাওয়া যায়। জাটকা ধরা বন্ধে দোকানে দোকানে সচেতনতামূলক লিফলেট ঝোলানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইলিশ মার্চ ও এপ্রিলে নদীতে খুব বেশি বিচরণ করে না। এ সময় শুধু জাটকাগুলো বিচরণ করে। এর ফলে এ সময়ে ইলিশের অভয়াশ্রমে মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়।
ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মোল্লা এমদাদুল্যাহ সময়ের আলোকে বলেন, ইলিশের পাঁচটি অভয়াশ্রম রয়েছে। এসব স্থানে মার্চ-এপ্রিলে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। আবার বঙ্গোপসাগরেও এ সময়ে ইলিশ কম ধরা পড়ে। বৃষ্টি হওয়ার পড়ে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। আশা করছি, আগামী জুন মাসে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে। ইলিশের চাহিদা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তালিকা করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ লাখ ২৯ হাজার টন। সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রফতানিকারক সমিতির ভাষ্য, প্রতি বছর দেশে সাড়ে ৫ লাখ থেকে ৬ লাখ টন ইলিশ উৎপাদিত হয়। ২০২৪ সালে দেশে ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার টন। এর মধ্য থেকে মাত্র ৩ হাজার টন রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা মোট উৎপাদনের মাত্র শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ।

আরও পড়ুন