মাদক কারবারিরা সশস্ত্র ও বেপরোয়া হওয়ায় তাদের মোকাবিলা করতে গত বছরের নভেম্বরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে (ডিএনসি) অস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর অস্ত্র পাওয়ার অনুমোদনে বেশ উচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয় অধিদফতরে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে গেজেট আকারে ডিএনসির অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। এতে অস্ত্রের ধরন, সংগ্রহ পদ্ধতি, অস্ত্রাগার, প্রশিক্ষণ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের পূর্বে ও পরে করণীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের পরের তদন্ত পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এ অনুযায়ী সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে অধিদফতর। কিন্তু এখনও অস্ত্র কেনার টাকা না পাওয়ায় কার্যক্রম এগোতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।
ডিএনসি কর্মকর্তারা বলছেন, পটপরিবর্তনের পর আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে অস্ত্র ছাড়া অভিযান পরিচালনা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় দ্রুত অস্ত্র কেনার ব্যবস্থা নিলে মাদকবিরোধী অভিযানে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে।
সূত্র বলছে, অতীতে মাদক কারবারি ও এ সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের মোকাবিলা করতে গিয়ে অধিদফতরের নিরস্ত্র কর্মী হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। সাধারণত অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হয়। কিন্তু জরুরি অবস্থায় সবসময় প্রয়োজনীয় মাত্রায় সহযোগিতা পাওয়া সম্ভব হয় না। এ কারণে অনেক দিন ধরে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ চেয়ে আসছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পর ৫৭৯ জনের জন্য অস্ত্র কেনার অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়।
ডিএনসি সূত্র বলছে, এই ৫৭৯ জন কর্মকর্তার জন্য ‘নাইন এমএম টি-৫৪’ মডেলের ৫৭৯টি সেমি অটোমেটিক পিস্তল কেনা হবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে। অস্ত্রগুলো কিনতে ব্যয় হবে সাড়ে ৪ কোটি টাকা। কিন্তু এখনও টাকা হাতে পায়নি ডিএনসি। এ জন্য অস্ত্র কেনা ঝুলে আছে। কবে অস্ত্র কেনার টাকা দেওয়া হবে সেটিরও কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে অস্ত্র কেনা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে সেমি অটোমেটিক পিস্তলগুলো শুধু এসআই এরপর থেকে ডিডি পর্যায়ের কর্মকর্তা পাবেন বলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়। কারণ মাঠ পর্যায়ে এসআই পদের নিচের সদস্যরা অর্থাৎ কনস্টেবল ও এএসআইরা আসামি ধরার কাজটি করে থাকে। এ ক্ষেত্রে কনস্টেবল ও এএসআইদের জন্য রাইফেল কেনার পরিকল্পনা করছে অধিদফতর। দ্রুতই এ বিষয়ক একটি প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। রাইফেল কেনার অনুমোদন মিললে, কনস্টেবল ও এএসআইদের জন্য রাইফেল কেনা হবে।