আমারদেশ২৪ ডেস্ক:
শনিবার১৭ মে, ২০২৫
হেলগাম-কাণ্ডে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত চলাকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে সুযোগ বুঝে পুশইন করা শুরু করে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
ইতিমধ্যে গত (৪-১৫ মে) পর্যন্ত মোট ৩৭০ জনকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পুশইন করেছে বিএসএফ। নতুন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে আরও ৭৫০ জনকে পুশইনের চেষ্টা করা হয়েছে। খাগড়াছড়ি সীমান্তের ওপারেও ২০০-৩০০ জনকে জড়ো করে রাখা হয়েছে। এতে পুশইন ঠেকাতে উত্তেজনা বাড়ছে সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায়। পুশইন বন্ধে বিজিবির মৌখিক ও লিখিত প্রতিবাদ এবং দিল্লিকে পাঠানো ঢাকার কূটনৈতিক চিঠি কোনো কাজে আসছে না।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্পর্কে চির ধরায় বাংলাদেশকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে অবৈধ ও ন্যক্কারজনক পুশইন তৎপরতা চালাচ্ছে ভারত। কূটনৈতিকভাবে এটি সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এরপরও অবৈধ পুশইন বন্ধ না হলে বাংলাদেশকে বিষয়টি নিয়ে জাতিসঙ্ঘের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।
গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, ভারতীয়রা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে নতুন এ কৌশলের পথ বেছে নিয়েছে। বিজিবি থেকে জানানো হয়েছে, পুশইন ঠেকাতে সীমান্তবর্তী এলাকায় কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে পুশব্যাক করানোর চিন্তার কথাও জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি, কুড়িগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে এখন পর্যন্ত ভারত থেকে পুশইনের মাধ্যমে আসা ২৯২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। তাদের মধ্যে ২৫৩ জন বাংলাদেশি, ১৯ জন রোহিঙ্গা এবং বাকি ২০ জনের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। আর সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে কোস্ট গার্ড আটক করেছে ৭৮ জনকে। সাতক্ষীরায় ৭৮ জনের মধ্যে তিনজন জন্মসূত্রে ভারতের নাগরিক। মোট আটকের সংখ্যা ৩৭০ জন।
বিজিবি সূত্র জানায়, ভারতে জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) নিবন্ধিত ৫ রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ। আটক ব্যক্তিরা একই পরিবারের সদস্য এবং ভারতের আসামের মাটিয়া রিফিউজি ক্যাম্পে বসবাস করছিলেন। সবশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা সীমান্ত দিয়ে গভীর রাতে ৭৫০ জনকে পুশইনের চেষ্টা করেছে বিএসএফ। তবে বিজিবি ও স্থানীয় জনতার কঠোর প্রতিরোধের মুখে তারা সেটা পারেনি।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাতভর সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করে। তবে পরিস্থিতি টের পেয়ে বিএসএফ সরে যাওয়ায় কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। জানা গেছে, ভারতের রাজস্থান থেকে ‘অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক ১৪৮ জনকে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আটক আরও ছয় শতাধিক ব্যক্তিকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএসএফ।
সবশেষ এর আগে বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলসহ কয়েকটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে পুশইন করার সময় ৩০ জনকে আটক করে বিজিবি।