নিজস্ব প্রতিবেদক:
শনিবার ২৪ মে ২০২৫
আট বিভাগের আটটি জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে কুরবানির পশু লালন-পালনের শেষ ধাপের প্রস্তুতি। খামার ও গ্রামীণ বাড়িঘরে দেশি জাতের গরু, খাসি ও মহিষ লালন-পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। তবে গেল সপ্তাহে জমে উঠেনি রাজশাহীর পশুর হাটগুলো।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, রাজশাহী বিভাগে এ বছর প্রস্তুত করা হয়েছে মোট ৪৩ লাখ কুরবানির পশু, যেখানে চাহিদা রয়েছে ২৬ লাখের মতো। ফলে এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১৭ লাখ পশু দেশের বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে পাঠানো হবে।
রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি জেলায় এখন পশুর হাট বসতে শুরু করেছে। যদিও জমজমাট কেনাবেচা শুরু হতে সপ্তাহখানেক লাগবে বলে জানান হাট ইজারাদার ও পশু ব্যবসায়ীরা। গ্রামাঞ্চলে এখনও অনেক খামারি নিজ নিজ ঘরে এক থেকে দুটি করে দেশি জাতের পশু লালন-পালন করছেন। পাশাপাশি বড় খামারগুলোতে শাহীওয়াল, সিন্ধি, রেট চিটাগাং, পাবনা ব্রিড এবং মীরকাদিম জাতের গরু কুরবানির জন্য মোটাতাজা করা হচ্ছে।
খামারিরা দাবি করছেন, তারা কোনো ক্ষতিকর ইনজেকশন বা কৃত্রিম ভিটামিন ছাড়াই পশুগুলোকে ঘাস, ভুট্টা, ফিড ও দানাদার খাদ্য খাইয়ে প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজা করছেন। রাজশাহী, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, নাটোর, পাবনা, জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সব জেলায় একই ধরনের চিত্র লক্ষ করা গেছে।
রাজশাহীর হরিপুর এলাকার নাদিরা বেগম ৮ মাস আগে ৬৫ হাজার টাকায় একটি গরু কেনেন। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরুটি লালন-পালন করে এখন বিক্রির উদ্দেশ্যে হাঁটে তুলতে চান। তিনি বলেন, আমি এই গরুটিকে ৮ মাস আগে ৬৫ হাজার টাকায় কিনেছিলাম। শুরু থেকেই সিদ্ধান্ত ছিল কোনো ইনজেকশন বা কেমিক্যাল ব্যবহার করব না।
শুধু ঘাস, ভুসি, ভুট্টা আর ঘরে তৈরি দানাদার খাবার খাইয়ে প্রাকৃতিকভাবেই বড় করেছি। গরুটিকে সন্তানদের মতো যত্ন করে পালন করেছি। এখন কুরবানির ঈদ সামনে রেখে চাইছি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে। আশা করছি, যারা ভালো গরু চায়, তারা এর মূল্য বুঝবে।
রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী জানান, এই অঞ্চলে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি পশু উৎপাদন হয়েছে। যার ফলে প্রায় ১৭ লাখ পশু দেশের অন্যান্য এলাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে।